টাঙ্গাইলের জোবায়দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে পরীক্ষার ফির নামে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। সরকারি প্রজ্ঞাপনে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার ফি নেওয়ার বিধান না থাকলেও তার তোয়াক্কা না করে বিদ্যালয়ের দুইশ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে পরীক্ষা ফি বাবদ প্রায় ২০ হাজার টাকা আদায় করেছেন ওই শিক্ষক।
শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে শ্রেণি ভেদে ৭০-১০০ টাকা পর্যন্ত ফি আদায় করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। তবে, কোনো পরীক্ষার ফি বাবদ অতিরিক্ত টাকা আদায় করেননি বলে দাবি করেছেন প্রধান শিক্ষক।
১৯৬৪ সালে টাঙ্গাইল পৌরসভার আশেকপুর এলাকায় ৫০ শতাংশ জায়গার ওপর স্থাপিত হয় জোবায়দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বর্তমানে এ বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় দুইশত। শিক্ষকের সংখ্যা ৮ জন। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে বিভিন্ন শ্রেণির অর্ধ বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা জানায়, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৭৫ টাকা হারে পরীক্ষা ফি আদায় করা হয়েছে। এছাড়া তৃতীয় শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে ১০০ টাকা হারে পরীক্ষার ফি আদায় করা হয়েছে।
তারা আরও জানায়, শুরুতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির জন্য ১০০ টাকা আর তৃতীয় শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ২০০ টাকা পরীক্ষা ফ্রি নির্ধারণ করা হয়। পরে অভিভাবকদের প্রতিবাদের মুখে পরীক্ষার ফি কমানো হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক জানায়, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ালেখা থেকে শুরু করে বেতন-পরীক্ষার ফি সরকার বহন করে। এমনকি শিক্ষার্থীদের বছরের শুরুতেই বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক দেওয়া হয়। এছাড়া মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ালেখা উৎসাহ প্রদানের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে উপবৃত্তি দেওয়া হয়। অথচ জোবায়দা খানম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মরিয়ম বেগমের একক সিদ্ধান্তে পরীক্ষার ফি আদায় করেছেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষক মরিয়ম বেগম বলেন, পরীক্ষার ফি বাবদ কোনো অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয়নি। বিদ্যালয়ের কিছু ঈর্ষান্বিত সহকর্মী তাকে বিপদে ফেলার জন্য এসব অভিযোগ করেছেন।
বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, ব্যবসা সূত্রে ঢাকায় থাকি। পরীক্ষা বাবদ অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ যদি সত্য হয় তাহলে পরিচালনা পর্ষদের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, কোনো অবস্থাতেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পরীক্ষার ফি আদায় করা যাবে না। যদি কোনো প্রধান শিক্ষক পরীক্ষার ফি নিয়ে থাকেন তবে তিনি আইনগতভাবে অপরাধ করেছেন।