বৃহস্পতিবার , ২৪ আগস্ট ২০২৩ | ২১শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. উপ-সম্পাদকীয়
  5. কৃষি ও প্রকৃতি
  6. ক্যাম্পাস
  7. খেলাধুলা
  8. চাকরি
  9. জাতীয়
  10. জীবনযাপন
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দেশগ্রাম
  13. দেশজুড়ে
  14. ধর্ম
  15. নারী ও শিশু

দাবি-কর্মসূচিতে মিল, তবু বিএনপির সঙ্গে যাবে না সিপিবি–বাসদের জোট

প্রতিবেদক
নিউজ ডেস্ক
আগস্ট ২৪, ২০২৩ ৮:৩৭ পূর্বাহ্ণ

বর্তমান সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন—বিএনপির নেতৃত্বাধীন যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দল ও জোটগুলোর এই দাবি বাম গণতান্ত্রিক জোটেরও। দাবি আদায়ে সিপিবি-বাসদসহ কয়েকটি বাম দলের এই জোট যেসব কর্মসূচি পালন করছে, সেগুলোরও সাদৃশ্য রয়েছে বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গে। তবে দাবি ও কর্মসূচিতে মিল থাকলেও বিএনপির নেতৃত্বাধীন যুগপৎ আন্দোলনে যুক্ত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই বাম জোটের।

যদিও সিপিবি-বাসদের এই জোট বর্তমান সরকারের পদত্যাগ চাইছে, কিন্তু জোটের নেতারা বলছেন, তাঁদের আন্দোলন বিএনপিকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য নয়। কারণ, বিএনপির সঙ্গে সিপিবিসহ বাম জোটের দলগুলোর আদর্শগত কোনো মিল নেই। এ ছাড়া তাদের লক্ষ্য আওয়ামী লীগ-বিএনপির দ্বিদলীয় ধারা থেকে বের হওয়া। সে জন্য বাম জোট তাদের সমমনা জোট ও দলগুলোকে নিয়ে নিজেদের মতো করে আন্দোলনে নেমেছে। তারা তাদের এই আন্দোলনকেও যুগপৎ আন্দোলন হিসেবে উল্লেখ করছে।বাম জোট এখন সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছে। তবে জোটের নেতারা বলছেন, চলমান দুঃশাসনের পাশাপাশি রাষ্ট্রব্যবস্থারও পরিবর্তন চান তাঁরা।

বাম গণতান্ত্রিক জোটের অন্যতম শরিক বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুঃশাসন’ থেকে পরিত্রাণ পেতে তাদের আন্দোলন চলছে। এই আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ব্যবস্থার পরিবর্তন। বর্তমান সরকারের দুঃশাসনের বদলে বিএনপি বা অন্যদের বসানো তাদের লক্ষ্য নয়। ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা, ঐক্য ন্যাপ ও বাংলাদেশ জাসদের সঙ্গে যুগপৎ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। ফলে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনাই নেই।

বিএনপির সঙ্গী হতে চায় না সিপিবি-বাসদের বাম জোট

বিএনপির সঙ্গী হতে চায় না সিপিবি-বাসদের বাম জোট

সিপিবি-বাসদের এই জোটের প্রধান দাবি হচ্ছে, নির্বাচনব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ও নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন। এর সঙ্গে তাদের আরও কয়েকটি দাবি রয়েছে, সেগুলো হলো দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, রেশনিং ব্যবস্থা ও ন্যায্যমূল্যের দোকান চালু, দুর্নীতি ও লুটপাট বন্ধ, পাচার করা টাকা ফিরিয়ে আনা এবং দোষী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনা।

১৭ আগস্ট বাম গণতান্ত্রিক জোটের পরিচালনা পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে জোটের নেতারা অবিলম্বে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানান। বর্তমান সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণাও দেন নেতারা।বিএনপির ঘোষিত ৩১ দফাতে ভালো কিছু বিষয় আছে। কিন্তু তাদের সঙ্গে বাম জোটের আদর্শগত মিল নেই। আদর্শিক অবস্থান থেকে বাম জোট আওয়ামী লীগ-বিএনপির দ্বিদলীয় ধারার বাইরে একটি স্বতন্ত্র ধারা সৃষ্টি করতে চাইছে।

সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন

বাম জোট এখন সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছে। তবে জোটের নেতারা বলছেন, চলমান দুঃশাসনের পাশাপাশি রাষ্ট্রব্যবস্থারও পরিবর্তন চান তাঁরা। অন্যদিকে বিএনপিসহ যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দল ও জোটগুলোও বলছে, তারাও বিদ্যমান ব্যবস্থার সংস্কার চায়। সংবিধান ও রাষ্ট্রব্যবস্থার সংস্কার এবং অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে ৩১ দফা রূপরেখা ঘোষণাও করেছে বিএনপি।

এ বিষয়ে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপির ঘোষিত ৩১ দফাতে ভালো কিছু বিষয় আছে। কিন্তু তাদের সঙ্গে বাম জোটের আদর্শগত মিল নেই। আদর্শিক অবস্থান থেকে বাম জোট আওয়ামী লীগ-বিএনপির দ্বিদলীয় ধারার বাইরে একটি স্বতন্ত্র ধারা সৃষ্টি করতে চাইছে।

আন্দোলনে নামছে সিপিবি–বাসদের বাম জোট

আন্দোলনে নামছে সিপিবি–বাসদের বাম জোট

বাম জোট গত জুলাই মাসে রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় সভা ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে। আগস্ট মাসে বিভাগ ও মহানগর পর্যায়ে সমাবেশ করছে বাম জোট। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর ঢাকায় একটি বড় সমাবেশ আয়োজনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে জোটের পক্ষ থেকে। সেপ্টেম্বরে দেশব্যাপী গণজাগরণ যাত্রা কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে জোট সূত্রে জানা গেছে। এর মধ্যে দাবি আদায় না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি আসবে।তবে গণসংহতি আন্দোলন ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি—এই দুই দল আলাদা জোট করে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে অংশ নেওয়ার কারণে বাম গণতান্ত্রিক জোটে নেই। এখন সিপিবি-বাসদের বাম জোটে আছে ছয়টি দল।

২০১৮ সালের ১৮ জুলাই বাম গণতান্ত্রিক জোট আত্মপ্রকাশ করে। এই জোটে ছিল বামধারার আটটি রাজনৈতিক দল। সেগুলো হলো বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্ক্সবাদী), বাংলাদেশের ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি (মার্ক্সবাদী) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন।

তবে গণসংহতি আন্দোলন ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি—এই দুই দল আলাদা জোট করে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে অংশ নেওয়ার কারণে বাম গণতান্ত্রিক জোটে নেই। এখন সিপিবি-বাসদের বাম জোটে আছে ছয়টি দল।

বাম যুগপৎ আন্দোলনে অন্যরা

বাংলাদেশ জাসদ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোটের শরিক ছিল। কিন্তু তারা এখন সেই জোটে নেই। কয়েক বছর ধরে দলটি নিজস্ব কর্মসূচি পালন করে আসছে। এখন দলটি বাম গণতান্ত্রিক জোটের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করছে। যুগপৎ আন্দোলনে যুক্ত হয়েছে ঐক্য ন্যাপও।

বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নূরুল আম্বিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিরপেক্ষ নির্বাচন, দুর্নীতি-লুটপাট বন্ধের দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছি। তবে গণতন্ত্র বিশ্বাস করলে সমঝোতার পথ বের করা সম্ভব। রাজপথে কার কত লাঠিয়াল, তা দেখানোর বদলে আলাপ-আলোচনা করে একটি পথ বের করা উচিত।’

চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি বামপন্থী সাতটি সংগঠন মিলে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা’ নামের নতুন জোট গঠনের ঘোষণা দিয়েছে। আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের অবসানের লক্ষ্যে এই মোর্চা করা হয়। সংগঠনগুলো হলো বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলন, নয়াগণতান্ত্রিক গণমোর্চা, গণমুক্তি ইউনিয়ন, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ–মাহবুব), কমিউনিস্ট ইউনিয়ন, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টি ও জাতীয় গণতান্ত্রিক গণমঞ্চ। ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চাও বাম গণতান্ত্রিক জোটের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচি পালন করছে।

বাম গণতান্ত্রিক জোট তাদের আন্দোলনের ক্ষেত্রে সরকারের পদত্যাগের দাবির পাশাপাশি আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ধারার বাইরে স্বতন্ত্র একটা অবস্থান তৈরি করার কথা বলছে। কিন্তু এই জোটের শরিক দলগুলোর সাংগঠনিক শক্তি যে সেভাবে নেই। জোটের নেতারা অবশ্য বলছেন, সাংগঠনিক দুর্বলতা বিবেচনায় রেখেই তাঁরা মাঠে নেমেছেন। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে মাঠে থেকে নিজেদের একটা অবস্থান দেখানো এবং সাংগঠনিক শক্তি বাড়ানোও তাঁদের অন্যতম লক্ষ্য।

সর্বশেষ - আইন-আদালত