মঙ্গলবার , ২৯ আগস্ট ২০২৩ | ২১শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. উপ-সম্পাদকীয়
  5. কৃষি ও প্রকৃতি
  6. ক্যাম্পাস
  7. খেলাধুলা
  8. চাকরি
  9. জাতীয়
  10. জীবনযাপন
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দেশগ্রাম
  13. দেশজুড়ে
  14. ধর্ম
  15. নারী ও শিশু

গুলশানে ব্যবসায়ী খুনের মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত গৃহকর্মীর জামিন বহাল

প্রতিবেদক
নিউজ ডেস্ক
আগস্ট ২৯, ২০২৩ ৫:৩৬ পূর্বাহ্ণ

রাজধানীর গুলশানে ২০১২ সালে নিজ বাসায় ব্যবসায়ী ফজলুল হক খুনের দায়ে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত গৃহকর্মী মো. সবুজের জামিন বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত।

হাইকোর্টের জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার (২৮ আগস্ট) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের চেম্বার জজ আদালত সবুজ জামিন আদেশে ‘নো অর্ডার’ দেন। এর ফলে সবুজের জামিন বহাল থাকলো বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

আদালতে এদিন রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শাহীন আহমেদ খান। আর আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আরিফুল ইসলাম।

এর আগে গত ২৩ আগস্ট বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সজিবের জামিন মঞ্জুর করেন।

আদালতে সজিবের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আরিফুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শাহীন আহমেদ খান।

পরে সজিবের জামিন স্থগিত চেয়ে গত ২৪ আগস্ট আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। এদিন শুনানি শেষে চেম্বার জজ আদালত জামিন স্থগিত না করে হাইকোর্টের আদেশের বিষয়ে ‘নো অর্ডার’ দেন।

আদালতে আসামিপক্ষের আইনজীবী আরিফুল ইসলাম বিনা ফি-তে মামলাটি পরিচালনা করছেন।

এ বিষয়ে আইনজীবী আরিফুল ইসলাম বলেন, দরিদ্র সবুজের পক্ষে বিনা পয়সায় মামলাটি পরিচালনা করছি। অপ্রাপ্ত বয়সের সবুজের জবানবন্দির ওপর ভিত্তি করে তাকে যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়েছে। ঘটনার সময় সবুজের প্রকৃত বয়স ১৮ বছরের কম ছিল। আর মামলায় প্রত্যক্ষদর্শী কোনো সাক্ষীও নেই। আমরা আশা করছি, যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে আপিলে সবুজ খালাস পাবেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১২ সালের ২৮ জুলাই দিবাগত রাতে রাজধানীর গুলশানের নিজ বাসায় ফজলুল হক খুন হন। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে সবুজ ও সুমনকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। ঘটনার পরদিন নিহতদের স্ত্রী সামসুন্নাহার বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয়ের কয়েকজন ব্যক্তিকে আসামি করে গুলশান থানায় মামলা করেন।

ফজলুল হক খুনের অভিযোগে ২৯ জুলাই গৃহকর্মী সবুজ ও সুমন নামে আরেকজনকে গ্রেফতার দেখিয়ে ঢাকার আদালতে তোলা হয়। এরপর সবুজ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

এই মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) পুষ্পেন দেবনাথ মামলায় সবুজের বয়স দেখান ১৯ বছর। মামলার দ্বিতীয় তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিদর্শক মাহবুবুর রহমান আদালতে দেওয়া প্রতিবেদনে সবুজের বয়স দেখান ২০ বছর। মামলার তৃতীয় তদন্ত কর্মকর্তা র্যাবের তৎকালীন এএসপি মোহাম্মদ রেজাউল কবির মামলার কাগজপত্রে সবুজের বয়স দেখান ২১ বছর। তবে র্যাবের দেওয়া অভিযোগপত্রে সবুজের বয়স ২০ বছর দেখানো হয়। এরপর ২০১৪ সালের ১৭ জুন মামলায় সবুজের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

বিচার চলাকালে সবুজের নিজের নিয়োগ করা কোনো আইনজীবী ছিল না। রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী শাহাবুদ্দিন আহমেদ আসামি সবুজের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন।

ওই সময় রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আদালতে লিখিত আবেদন দিয়ে বলেন, জন্মসনদে আসামির জন্ম তারিখ লেখা রয়েছে ১৯৯৮ সালের ৩ জানুয়ারি। সে অনুযায়ী, আসামি অপ্রাপ্তবয়স্ক। তবে সবুজের বয়স নিয়ে আদালতে আবেদন করা হলে, সে আবেদন নাকচ করেন আদালত।

এই খুনের ঘটনায় সবুজ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে খুনের ঘটনায় জড়িত তিনজনের নাম প্রকাশ করেন। অবশ্য সবুজের স্বীকারোক্তি সঠিক নয় বলে আদালতে প্রতিবেদন দেয় ডিবি পুলিশ।

পরে ২০১৩ সালের ৩০ জানুয়ারি সবুজের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় ডিবি পুলিশ। তবে আদালত ডিবির দেওয়া অভিযোগপত্র গ্রহণ করেনি। এরপর মামলাটি আবার তদন্তের জন্য র্যাবকে নির্দেশ দেন আদালত।

পরে বিচার শেষে ২০১৫ সালের ১৪ মে সবুজকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪। ওই রায়ের দুই বছর পর দণ্ডিত সবুজের পক্ষে উচ্চ আদালতে বিলম্ব মার্জনা চেয়ে ক্রিমিনাল আপিল করা হয়। পাশাপাশি জামিন আবেদন করা হয়।

সেই জামিন আবেদনের শুনানি শেষে হাইকোর্ট গত ২৩ আগস্ট সবুজকে জামিন দেন। এরপর জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করে। আজ শুনানি শেষে চেম্বার জজ আদালত হাইকোর্টের জামিন আদেশের বিষয়ে কোনো আদেশ না দিয়ে ‘নো অর্ডার’ দেন। এর ফলে সবুজকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন আদেশ বহাল থাকবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। ২০১২ সালে গ্রেফতারের পর থেকে সবুজ এখনও কারাগারে রয়েছেন।

সর্বশেষ - আইন-আদালত