চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা অসুস্থ বানরটিকে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তাহমিনা আরজু বানরটিকে সেখানে নিয়ে যাচ্ছেন।
এর আগে সোমবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসার ৪৪ ঘণ্টা পর বানরটিকে উদ্ধার করে উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ। বেলা ১টার দিকে বন বিভাগের বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের দুই কর্মী এসে বানরটিকে একটি জালের সাহায্যে আটক করে। এরপর বানরটিকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে নেওয়া হয়।
আজ সোমবার সকাল ৯টার দিকে বানরটি তৃতীয়বারের মতো হাসপাতালে এলে এর ক্ষতস্থান ড্রেসিং করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্যকর্মীরা। তাঁরা বলেন, সকালে যখন স্বাস্থ্যকর্মীরা বানরটিকে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছিলেন, তখন বানরটি চুপচাপ হয়ে সিঁড়ির রড ধরে বসে ছিল। ব্যান্ডেজ শেষ হওয়ার পর সেটি ধীরে ধীরে হাসপাতালের বাগানে চলে যায়।
গত শনিবার বিকেলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকার প্রথমবারের মতো অসুস্থ বানরটিকে দেখা যায়। বৈদ্যুতিক শকে আহত হওয়া ওই বানরটি যন্ত্রণায় কাতর ছিল। এর শরীরের পেছনের অংশে গভীর ক্ষত। সেদিন তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। গতকাল রোববারও বানরটি হাসপাতালে হাজির হয়। পরে বিকেল পাঁচটার দিকে বানরটিকে ড্রেসিং করে প্রথমবারের মতো ব্যান্ডেজ করা হয়।
আহত বানরটি আবারও হাসপাতালে, এবার চিকিৎসা দেবেন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নুর উদ্দিন রাশেদ বলেন, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তাহামিনা আরজুর নেতৃত্বে একদল পশুচিকিৎসক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। এরপর তাঁরা বানরটির গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করেন। তাঁরা অপেক্ষা করছিলেন বন বিভাগের কর্মীদের জন্য। বেলা একটার দিকে বন বিভাগের কর্মীরা এসে বানরটিকে ধরেন। এরপর তাঁরা দেড়টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ছেড়ে চলে যান।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের পশুচিকিৎসকেরা প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ শেষে দেখেন বানরটিকে সুস্থ করতে হলে উন্নত চিকিৎসা দরকার। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে ওষুধপত্র দিয়ে বানরটিকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব নয়। অস্ত্রোপচার প্রয়োজন। অস্ত্রোপচার করতে গেলে অবেদনবিদ লাগবে।
বিদ্যুতের শক নিয়ে দ্বিতীয় দিনের মতো হাসপাতালের বারান্দায় বানর
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তাহামিনা আরজু বলেন, বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের দুই কর্মী এসে বানরটিকে প্রথমে আটক করেন। তারপর সেটিকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে নিয়ে যান তাঁরা। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দেওয়া ব্যান্ডেজ খুলে দেখা গেল, ক্ষত এত বেশি, প্রাথমিক চিকিৎসায় বানরটিকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব নয়। পরে তিনি চট্টগ্রামের ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বানরটিকে সেখানে নিয়ে যেতে বলে। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে তাঁরা বানরটিকে নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা দেন।