২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর সোলায়মানে কুলিবালি। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির মধ্যে অন্যতম। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, দেশটি ২০৪১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার জন্য সঠিক পথে রয়েছে। কারণ বাংলাদেশ করোনা মহামারি সত্ত্বেও এর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রেখেছে।
মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) আয়োজিত ‘বাংলাদেশে ছোটো উদ্যোগের ক্রমবিকাশ: প্রেক্ষিত আরএআইএসই প্রকল্প’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় সম্মাননীয় অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
পিকেএসএফ ভবনে এ সভার আয়োজন করা হয়। পিকেএসএফ চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদের সভাপতিত্বে এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. নমিতা হালদার এনডিসি।
ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, বাংলাদেশ জনমিতিক সুযোগ (ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট) গ্রহণ করতে হলে ক্ষুদ্র উদ্যোগে বিনিয়োগ করা জরুরি। ক্ষুদ্র উদ্যোগের বিকাশে আর্থিক পরিষেবার পাশাপাশি অ-আর্থিক পরিষেবা যেমন সক্ষমতা বৃদ্ধিমূলক কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
পিকেএসএফ পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর ভাগ্যোন্নয়নে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে ড. নমিতা হালদার বলেন, আরএআইএসই প্রকল্পটি পিছিয়েপড়া মানুষের বিশেষ করে তরুণদের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে তাদের সার্বিক জীবনমান উন্নয়নে কাজ করছে।
সভায় ‘বাংলাদেশে ছোটো উদ্যোগের বিকাশ: সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ’ বিষয়ক উপস্থাপনায় পিকেএসএফের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল কাদের দেশীয় ছোটো উদ্যোগের বিকাশে পিকেএসএফের বিভিন্ন কার্যক্রম ও প্রকল্পের ভূমিকা তুলে ধরেন। এছাড়া রিকভারি অ্যান্ড অ্যাডভান্সমেন্ট অব ফরমাল সেক্টর এমপ্লয়মেন্ট (আরএআইএসই) প্রকল্পের বিভিন্ন দিক নিয়ে উপস্থাপনা করেন মহাব্যবস্থাপক (কার্যক্রম) ও প্রকল্প সমন্বয়কারী (আরএআইএসই) দিলীপ কুমার চক্রবর্তী।
উপস্থাপনাসমূহের ওপর আলোচনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক এম. এ. বাকী খলীলী। অনুষ্ঠানে তৃণমূল পর্যায়ের আরএআইএসই প্রকল্পের কয়েকজন অংশগ্রহণকারী তাদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। এসময় পিকেএসএফ ও এর সহযোগী সংস্থাসমূহের কর্মকর্তা এবং বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
ছোটো উদ্যোগে মানব সক্ষমতার বিকাশের লক্ষ্যে পিকেএসএফ ও বিশ্বব্যাংকের যৌথ অর্থায়নে আরএআইএসই প্রকল্প ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে যাত্রা শুরু করে। প্রকল্পটি ৭০টি সহযোগী সংস্থার মাধ্যমে দেশের ৬৪টি জেলার ৩৩৩টি উপজেলার শহর ও শহরতলি এলাকায় বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। পাঁচ বছর মেয়াদি এ প্রকল্পের আওতায় ১ লাখ ৭৫ হাজার তরুণ ও ছোটো উদ্যোক্তার সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থায়ন করা হচ্ছে। তরুণদের শোভন ও মর্যাদাপূর্ণ কর্মসংস্থানে যুক্ত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে আরএআইএসই প্রকল্প সরকারের প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১ ও টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিএস) অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।