রাজধানীতে কর্মসূচি ঘোষণা করে পুলিশ ও সরকারি দলের নেতা-কর্মীদের হামলা ও বাধার মুখে পড়ছে জামায়াতে ইসলামী। গত মঙ্গলবার কেন্দ্র ঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করতে গেলে পুলিশ রাজধানীর পান্থপথ এলাকা থেকে ১৭ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় নেতা-কর্মীদের ওপর ছাত্রলীগ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
দলের আমির শফিকুর রহমানসহ গ্রেপ্তার নেতা-কর্মীদের মুক্তি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন সংসদ নির্বাচনের দাবিতে ১৯ সেপ্টেম্বর ঢাকাসহ সব মহানগরে বিক্ষোভের কর্মসূচি দেয় জামায়াত। দলটির ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম মা’ছুম ১৭ সেপ্টেম্বর এই কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন।
জামায়াতের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, কিছুদিন ধরে রাজধানীতে কর্মসূচির ঘোষণা দিলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা গুরুত্বপূর্ণ সব জায়গায় পাহারায় থাকছে। একই সঙ্গে ছাত্রলীগ ও যুবলীগও লাঠিসোঁটা নিয়ে ওঁৎ পেতে থাকছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে সংঘাতের আশঙ্কায় শান্তিপূর্ণ মিছিল বের করার সুযোগ থাকছে না।
ওই সূত্র বলছে, সংঘাত এড়াতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াত কেন্দ্র ঘোষিত ১৯ সেপ্টেম্বরের এক দিন আগে ১৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে পান্থপথ এলাকায় মিছিল বের করে। সোনারগাঁও হোটেলের সামনে সার্ক ফোয়ারার কাছ থেকে মিছিলটি পান্থপথের দিকে যাওয়ার সময় পুলিশ ও ছাত্রলীগের হামলার মুখে পড়ে। সেখান থেকে পুলিশ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় অনেককে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে পুলিশের ভ্যানে তুলে দিতে দেখা যায়।
একইভাবে মহানগর উত্তর জামায়াতও গতকাল মঙ্গলবার দুই দফায় মিছিল করার উদ্যোগ নেয়। এর মধ্যে সকালে কারওয়ান বাজার এলাকায় এবং বিকেলে শাহজাদপুরে যমুনা ফিউচার পার্ক এলাকায়। কিন্তু পুলিশ ও সরকারি দলের সমর্থকদের ব্যাপক উপস্থিতি টের পেয়ে জামায়াত মিছিল বের করেনি। পরে আজ বুধবার সকালে পূর্ব রামপুরা বাজার এলাকা থেকে একটি মিছিল বের করে। সেটি মালিবাগ আবুল হোটেলের কাছে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। মিছিল ও সমাবেশে মহানগর উত্তর জামায়াতের সেক্রেটারি মুহাম্মদ রেজাউল করিম, সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, নাজিম উদ্দীন মোল্লা ও ফখরুদ্দীন মানিক, মহানগর উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য জিয়াউল হাসান, মুহিব্বুল্লাহ, জামাল উদ্দীনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের প্রচার সম্পাদক আতাউর রহমান সরকার প্রথম আলোকে বলেন, জামায়াতের কর্মসূচির দিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেন একধরনের কারফিউ অবস্থা তৈরি করে। বিভিন্ন স্পটে শত শত পুলিশ অবস্থান নেয়। এর সঙ্গে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ লাঠিসোঁটা নিয়ে আক্রমণ করে পুলিশের হাতে তুলে দিচ্ছে।
সর্বশেষ গত ১০ জুন প্রায় ১০ বছর পর পুলিশের অনুমতি নিয়ে ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে সমাবেশ করে জামায়াতে ইসলামী। এরপর আর দলটিকে কোথাও মিছিল বা সভা-সমাবেশের অনুমতি দিচ্ছে না পুলিশ। এ অবস্থায় জামায়াত অনুমতি ছাড়াই ঝটিকা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করছে।