মঙ্গলবার , ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ২৩শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. উপ-সম্পাদকীয়
  5. কৃষি ও প্রকৃতি
  6. ক্যাম্পাস
  7. খেলাধুলা
  8. চাকরি
  9. জাতীয়
  10. জীবনযাপন
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দেশগ্রাম
  13. দেশজুড়ে
  14. ধর্ম
  15. নারী ও শিশু

‘এমন বিপদে বাংলাদেশ কখনই পড়েনি’

প্রতিবেদক
নিউজ ডেস্ক
সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৩ ৫:২০ পূর্বাহ্ণ

জাতীয় নির্বাচন ঘিরে ফের অনিশ্চয়তা। দিন যত ঘনিয়ে আসছে, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ততই বাড়ছে। কী হবে সামনে? বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কী? রাজনীতির ভবিষ্যৎ কী? প্রধান দুই রাজনৈতিক জোট প্রায় যুদ্ধাংদেহী অবস্থায়। ছাড়ের প্রশ্নে অনড়। নির্বাচনের তফসিলের দিনক্ষণ গণনা হচ্ছে। অথচ সমাঝোতার কোনো লক্ষণ নেই।

বিগত দুটি নির্বাচন একতরফা হলেও আলোচনা, সংলাপের আয়োজন ছিল। ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়াকে টেলিফোন করেছিলেন। যদিও তাতে ফল হয়নি। ২০১৮ সালে নির্বাচনের আগে ব্যাপক আয়োজনের মধ্য দিয়ে সংলাপ হলো। ফলাফল ছিল শূন্য।

 অতীতকে সামনে এনে আমরা ভবিষ্যৎকে মূল্যায়ন করতে পারি না। বিদেশিরা সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলছে। সরকারও তাই বলছে। তবে আমি মনে করি জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশ কোন পথে যাবে।- আরেফিন সিদ্দিক

আপাতত সংঘাতের পথ পরিহার করে আন্দোলন করছে বিএনপি ও অন্য বিরোধীদলগুলো। শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাবে না তারা। অপরদিকে সরকারিদল নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন করার কথা বারবার জানান দিচ্ছে আওয়ামী লীগ।

এদিকে বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্ব মহল যেভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছে, তা আগে কখনই দেখা যায়নি। পূর্বঘোষিত ভিসা নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইউরোপীয় ইউনিয়ন জিএসপি সুবিধা বাতিলের আলোচনা করছে। রাজনীতিই সব সংকটের মূল।

এমন পরিস্থিতির শেষ কোথায়? সমাধান কী হতে পারে? এ বিষয়ে মতামত গ্রহণ করা হয় লেখক গবেষক, প্রাবন্ধিক ও সমাজ বিশ্লেষক ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের।

অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘যে সংঘাত ও অরাজকতা রাজনীতিতে চলছে, তা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। একটি দেশের রাজনীতি এমন অনিশ্চয়তার মধ্যে দীর্ঘদিন চলতে পারে না। আমাদের এখানে সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয়েছে গত দুই দশকে। এখানকার পেশাজীবীরা আর কোনো ভূমিকা রাখতে পারছেন না। গণমাধ্যমের প্রতি গণমানুষের কোনো আস্থা নেই। গণমাধ্যম লেজুড়বৃত্তি করে বিশ্বাস হারিয়েছে আগেই। তৃতীয়ত, ছাত্র সংগঠনগুলোও এখন নিষ্ক্রিয় নতুবা গণআন্দোলনবিরোধী। একটি দেশের সংকটময় মূহূর্তে এই তিনটি শক্তি জোরালোভাবে কাজ করার কথা। আপনি ভালো করে খেয়াল করবেন, আজকের সংকটের পেছনে এই তিনটি শক্তিই মুখ্য ভূমিকা পালন করছে।’

এই বিশ্লেষক মনে করেন, ‘এমন বিপদে বাংলাদেশ কখনই পড়েনি। সমাঝোতা করতে হবে সরকারকেই। কিন্তু সে লক্ষণ আমরা দেখতে পাচ্ছি না। দেশ সংকটে পড়লে সবচেয়ে বিপদে পড়ে সাধারণ মানুষ। অতীতে এই সাধারণ মানুষই সংকট মোকাবিলায় অংশ নিয়েছে। সরকার, রাষ্ট্র মিলে সাধারণ মানুষের সে শক্তির জায়গাগুলো ভেঙে দিয়েছে। সর্বত্রই ভয় এখন। কেউ কথা বলতে পারছে না বা বলতে চাইছে না।’

মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে একটি প্রকৃত গণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা গড়ে ওঠার কথা। সেটা গড়ে ওঠেনি। এই জায়গাটায় বামপন্থিরা নেতৃত্ব দেওয়ার কথা ছিল। বামপন্থিরা ব্যর্থ হয়েছে। বামপন্থিরা কেন পারলো না, তা নিয়ে সঠিক গবেষণাও নেই তাদের। অথচ ব্যাপক সম্ভাবনা ছিল এ দেশের বামপন্থিদের জন্য। সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ঠিক সে কারণেই।’

সংকট উত্তরণে আলোচনার ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, ‘আমি মনে করি, যত বড় সংকটই আসুক না কেন? সমাঝোতা হতেই হবে। দেশটি কোনো এক বিশেষ দলের নয়। সরকারকে এটি বুঝতে হবে। সমঝোতার জন্য, আলোচনার জন্য সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে। এর আগেও বিভিন্ন সংকট মোকাবিলায় সরকারকেই আলোচনার উদ্যোগ নিতে দেখা গেছে। এবারও তাই করতে হবে বলে আশা করি।’

অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘নির্বাচন এলে সংকট আসেই। কারণ নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলো দরকষাকষির জন্য আন্দোলন গড়ে তোলে। আমি বিশ্বাস করি শেষ পর্যন্ত সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবেই। দেশে আইন আছে, সংবিধান আছে, প্রশাসন আছে। নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলছে। সরকারও তাই বলছে। বিদেশিরাও একই প্রত্যাশা করছে।’

‘আমি মনে করি না শেষ পর্যন্ত কোনো সংকট স্থায়ী হবে। কারণ সময় বদলে যাচ্ছে। অনেক কিছুর পরিবর্তন হয়েছে। মানুষ নানাভাবে পরিবর্তনের সঙ্গে অভ্যস্ত।’

‘নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক সংস্থা। তারা সব দিক দিয়েই শক্তিশালী। তারা চাইলে ভোট সুষ্ঠু হবে। সরকারের বেশি কিছু করার থাকে না। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর নানা শাসন চলেছে। স্বৈরশাসন, সামরিক শাসন, অপশাসন ছিল। মানুষ তো মেকাবিলা করে আজকের এই জায়গায় এসেছে। আমরা গণতন্ত্রের পথে ধাবমান। অতীতকে সামনে এনে আমরা ভবিষ্যৎকে মূল্যায়ন করতে পারি না। বিদেশিরা সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলছে। সরকারও তাই বলছে। তবে আমি মনে করি জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশ কোন পথে যাবে।’ বলছিলেন আরেফিন সিদ্দিক।

 এমন বিপদে বাংলাদেশ কখনই পড়েনি। সমাঝোতা করতে হবে সরকারকেই। কিন্তু সে লক্ষণ আমরা দেখতে পাচ্ছি না। দেশ সংকটে পড়লে সবচেয়ে বিপদে পড়ে সাধারণ মানুষ। অতীতে এই সাধারণ মানুষই সংকট মোকাবিলায় অংশ নিয়েছে। সরকার, রাষ্ট্র মিলে সাধারণ মানুষের সে শক্তির জায়গাগুলো ভেঙে দিয়েছে।- সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

 

সর্বশেষ - আইন-আদালত