মানসম্মান বাঁচাতে বিএনপিকে আন্দোলন রেখে নির্বাচনে আসার আহ্বান জানিয়ে দলটির উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মানুষের শক্তি যখন কমে যায়, তখন চোখে-মুখে থাকে বিষ।
কাদের বলেন, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন করতে হবে, সেটাই তাদের জ্বালা। এমনিতেই পদ্মা সেতুর জ্বালা। হায়রে জ্বালা। মেট্রোরেল তাদের সহ্য হয় না। হায়রে জ্বালা! অন্তর জ্বালা! অন্তর জ্বালায় মরে কে? বিএনপি।
বুধবার (৯ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর গাবতলীতে আওয়ামী লীগের শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ এই সমাবেশের আয়োজন করে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নেতাদের বলব, মানসম্মান রাখতে চাইলে আন্দোলন রেখে নির্বাচনে আসুন। গতবার তো পাইছেন সাতটা। এইবার কী হবে আল্লাহ জানে! বিএনপির ভোট আছে?
তিনি বলেন, সারা বাংলাদেশের টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া, সুনামগঞ্জ থেকে সুন্দরবন, বাংলায় স্লোগান একটা- শেখ হাসিনা, বাংলাদেশ। জনতার ঢল দেখতে চান, বিএনপি নেতাদের বলি সাত রাস্তায় আসুন। জনতার ঢল কাকে বলে দেখে যান। শুধু মানুষ আর মানুষ। লাখো লোকের সমাবেশ। এক অভূতপূর্ব বিস্ময়।
বিএনপির দেশের জনগণের পরিবর্তে ‘বিদেশ প্রভুদের’ ওপর নির্ভরশীলতার দিকে ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আসল খবর হচ্ছে বিএনপির নেতারা আশার মালা গেঁথে ঘর বুনেছে, কখন আসবে উজরা জেয়া। কখন আসবে ইউরোপীয় প্রতিনিধিরা। আশার মালা গেঁথে বসেছিল। ইউরোপ এলো, এখনো যায়নি, যায় যায়। আমেরিকা এসে চলে গেল। বিএনপি তাদের মুখে যা শুনতে চেয়েছিল, এখন চোখ-মুখ শুকিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, বিএনপির মির্জা ফখরুল ইসলামসহ বিএনপির নেতাদের আমেরিকা বলে গেছে; বাংলাদেশের নিয়ম, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। ইউরোপও বলেছে, আমেরিকাও।
কাদের বলেন, পদযাত্রা করতে গিয়ে বাঙলা কলেজে হামলা করে, খাগড়াছড়িতে হামলা করে; বগুড়ায় স্কুলে ছাত্রলীগের ওপর হামলা করে, ককটেল মারে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আপনারা মাথা গরম করবেন না। ওরা পায়ে পা দিয়ে ঝগড়া করতে চায়। আমরা শান্তি চাই। শান্তি যত থাকবে, আমাদের ভোট তত বাড়বে। মাথা গরম করো না। এই যে তরুণ তুর্কিরা, হুট করে মাথা গরম!
তিনি বলেন, খেলা হবে ডিসেম্বরে। তৈরি হয়ে যান। আজকে বিএনপির নেতারা, জনগণের শক্তি একদিনে, আরেকদিনে সন্ত্রাস আর অস্ত্র। রাজনৈতিক আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে তারা এখন সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে। তাদের প্রতিহত করতে হবে। নির্বাচনে না আসলে, সেটা আপনাদের বিষয়। কিন্তু নির্বাচনে বাধা দিতে আসবেন, আমরা জনগণকে নিয়ে প্রতিহত করব।
কাদের বলেন, এক দফা! এক দাবি! ভুয়া! ২৭ দফা ভুয়া! ৫৪ দল ভুয়া! বিএনপির জোট, ভুয়া! বাংলার জনগণ বিএনপির ভুয়া রাজনীতি চায় না।
সরকারের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক জানান, অক্টোবরে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন হবে। চট্টগ্রামবাসী পাবেন টানেল। আগামী মাসে একদিনে আরও একশো সেতু উদ্বোধন করা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপির ঘুম নাই, কীভাবে ঠেকাবে এত উন্নয়ন?
তিনি বলেন, চলবে আন্দোলন। ফখরুল বলে ঢাকা অচল করে দেবে অক্টোবর মাসে। ঢাকা অচল করতে এলে ঢাকাবাসী বিএনপিকে অচল করে দেবে। অচল করতে এলে নিজেরা অচল হয়ে যাবে। ইউরেনিয়ামের দুটি চালান এসে গেছে। পুতিন (রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট) প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেছেন। বাংলাদেশে সাংঘাতিক আলো ঝলমল পরিবেশ হবে। এতে ফখরুলের অন্তর্জ্বালা, মঈনুদ্দিন খানের (মঈন খান) অন্তর্জ্বালা।
এসময় ঢাকা মহানগরের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।