অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে বিজিএমইএ প্রতিনিধিদল। সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে বিজিএমইএ’র প্রতিনিধিদল। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তারা।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় অর্থনীতিতে পোশাকশিল্পের অবদান এবং এ শিল্পের উন্নয়নে বিজিএমইএ’র অনবদ্য ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বিজিএমইএ’র সাহসের প্রশংসা করে আশাবাদ ব্যক্ত করেন, পোশাকশিল্প ২০৩০ সাল নাগাদ ১০০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানির যে স্বপ্নযাত্রা শুরু করেছে, তা সফল হবে।
বিজিএমইএ’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম প্রধান উপদেষ্টাকে পোশাকশিল্পের বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরেন।
বিজিএমইএ প্রতিনিধিদলে অন্যদের মধ্যে ছিলেন, ১ম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি আরশাদ জামাল দীপু, সহ-সভাপতি (অর্থ) মো. নাসির উদ্দিন, সহ-সভাপতি মিরান আলী, সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহ হিল রাকিব, সহ-সভাপতি রকিবুল আলম চৌধুরী এবং পরিচালকরা।
সাক্ষাৎকালে বিজিএমইএ প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টাকে জানান, বিশ্ববাসীর জীবনমান উন্নয়নে তার অবদান বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত, বহুল প্রশংসিত। তিনি একমাত্র বাঙালি যিনি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেছেন। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেওয়ায় পোশাকশিল্পে একটা পজিটিভ এনভায়রনমেন্ট তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে বৈশ্বিক ক্রেতাদের মধ্যে বাংলাদেশ সম্পর্কে চমৎকার একটি মনোভাব/আস্থা তৈরি হয়েছে। প্রতিনিধিদল উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পোশাকশিল্পের যে ভাবমূর্তির ক্ষতি হয়েছে, তা পূরণের জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে তার এক্স (সাবেক টুইটার) থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার ক্রেতাদের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ থেকে অধিক পোশাক কেনার আহ্বান জানানোর অনুরোধ জানান।
প্রতিনিধিদল পোশাকশিল্পের বিরাজমান সমস্যা সমাধান, বিশেষ করে ব্যবসার প্রতিবন্ধকতা অপসারণ, ব্যবসার প্রক্রিয়াগুলো সহজীকরণের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে একটি টাস্কফোর্স গঠন করার প্রস্তাবনাও দেন।
এসময় ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির জন্য সব সরকারি প্রতিষ্ঠানে যেসব সংস্কার করা প্রয়োজন, তা সবই বর্তমান সরকার করবে। তিনি টাস্কফোর্স গঠনের বিষয়ে বিজিএমইএ’র প্রতিনিধিদলের প্রস্তাবনার ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেন। তিনি বিজিএমইএ প্রতিনিধিদলকে আশ্বস্ত করে জানান, তার সরকার পোশাকশিল্পকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য যা যা করা দরকার, সবই করবে।
প্রধান উপদেষ্টা তার পরিচিতি ও ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়াকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের ব্র্যান্ড ইমেজকে উন্নত করা, বিশেষ করে পোশাকশিল্পের ব্র্যান্ডিংয়ের ব্যাপারে সচেষ্ট থাকবেন বলে প্রতিনিধিদলকে আশ্বস্ত করেন।
তিনি আশা করেন, বর্তমান সরকার ও পোশাকশিল্পের উদ্যোক্তারা মিলে সম্মিলিতভাবে এ শিল্পকে জাতীয় অর্থনীতিকে তথা নতুন বাংলাদেশকে আরও বহুদূর এগিয়ে নেবে।