শরীর সুস্থ রাখতে হাঁটাহাঁটির বিকল্প নেই। চিকিৎসকরাও দৈনিক ৩০-৪৫ মিনিট জোরে হাঁটার পরামর্শ দেন সুস্থতার জন্য। অনেকেই ফিট থাকতে সকাল-সন্ধ্যা দু’বেলা নিয়ম করে হাঁটেন।
আবার ডায়াবেটিস রোগীরাও রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক রাখতে নিয়ম করে হাঁটেন। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত হাঁটার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
স্পোর্টস মেডিসিন জার্নালে প্রকাশিত একটি মেটা-বিশ্লেষণে জানা গেছে, হার্টের স্বাস্থ্য, ইনসুলিন ও রক্তে শর্করার মাত্রার উপর বসা ও দাঁড়ানো/হাঁটার উপর নির্ভর করে।
দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার তুলনায় ঘন ঘন দাঁড়ানো কিংবা সামান্য হাঁটাহাঁটি করা রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা খারাপ জীবনধারার অংশ যা বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি দ্বিগুণ বাড়ায়।
একটানা ২ ঘণ্টা বসে থাকলেই গ্লুকোজ, ট্রায়াসিলগ্লিসারল ও উচ্চ-ঘনত্বের লাইপোপ্রোটিন কোলেস্টেরল বেড়ে যেতে পারে। যা কার্ডিওমেটাবলিক স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার মধ্যে সামান্য দাঁড়ানো হাঁটিকে সেডেন্টারি ব্রেক বলা হয়। নিয়মিত এই ব্রেক নিলে রক্তচাপ, এইচডিএল কোলেস্টেরল, ইনসুলিন, গ্লুকোজ, ট্রাইগ্লিসারাইড ও কোমরের পরিধি কমাতে। ঠিক একইভাবে খাওয়ার কিছুক্ষণ পর কয়েক মিনিট হাঁটলেও একই উপকারিতা মিলবে।
গবেষণায় কী পাওয়া গেছে?
দীর্ঘক্ষণ বসার পরিবর্তে স্বল্প সময়ের জন্য দাঁড়ানো পোস্টপ্র্যান্ডিয়াল গ্লুকোজের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। আরও দেখা গেছে, হালকা হাঁটা গ্লুকোজ ও ইনসুলিনের প্রভাব কমিয়েছে।
দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার তুলনায় দাঁড়িয়ে থাকলে ইনসুলিনে স্বাস্থ্যকর প্রভাব পড়ে। আবার খাওয়ার পরপরই শুয়ে পড়ার অভ্যাসও রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে তুলতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, যারা ডেস্কে বসে কাজ করেন তারা এই বিরতি নেন না। সময়স্বল্পতার অজুহাত দেখিয়ে অনেকেই কাজের ফাঁকে ব্রেক নেন না, অথচ এর মাধ্যমে নিজেদেরই ক্ষতি করছেন তারা।
আয়ারল্যান্ডের লিমেরিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন স্নাতক ছাত্র ও এই গবেষণাপত্রের লেখক আইদান নিউইয়র্ক টাইমসকে জানান, কর্মব্যস্ত থাকার পরও সুস্থতার জন্য মিনি-ওয়াক জরুরি। এই অভ্যাসকে বাধ্যতামূলক করুন।
লিফটের বদলে সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করা কিংবা কফি পান বা ফোনে কথা বলতে বলতে সামান্য হাঁটাহাঁটি করুন। এসব ছোটখাট অভ্যাস ওজন ও ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন রোগ নিয়ন্ত্রণ করবে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া