দুই মাস ধরে টানা বাড়ছে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ারের দাম। এতে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়ে প্রায় তিনগুণ হয়ে গেছে। প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের এই দাম বৃদ্ধিকে অস্বাভাবিক বলছে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ।
এ জন্য রোববার (২৮ আগস্ট) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করা হয়েছে। ডিএসই থেকে জানানো হয়েছে, ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ারের দাম বাড়ার পেছনে কোনো অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই।
ডিএসই জানিয়েছে, কোম্পানিটির শেয়ারের অস্বাভাবিক দাম বাড়ার কারণ জানাতে ডিএসই থেকে ২৫ আগস্ট নোটিশ পাঠানো হয়। জবাবে কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সম্প্রতি শেয়ারের যে অস্বাভাবিক দাম বেড়েছে এবং লেনদেন বেড়েছে তার জন্য কোনো অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত ২০ জুন কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ৮০ টাকা ৪০ পয়সা। সেখান থেকে বাড়তে বাড়তে ২৫ আগস্ট লেনদেন শেষে ২২০ টাকা দাঁড়ায়।
এমন দাম বাড়ার প্রেক্ষিতে ২৫ আগস্ট ডিএসই থেকে ওরিয়ন ইনফিউশনকে নোটিশ পাঠানো হয়। নোটিশের জবাবে কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সম্প্রতি শেয়ারের যে দাম বেড়েছে এবং লেনদেন বেড়েছে তার পেছনে কোনো অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদশীল তথ্য নেই।
অবশ্য এর আগে আগস্টের শুরুতে আর এক দফা কোম্পানিটিকে নোটিশ পাঠিয়েছিল ডিএসই। সে সময়ও একই উত্তর দেয় কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, ডিএসই থেকে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করা হলেও কোম্পানিটির শেয়ার দাম বাড়ার প্রবণতা থামছে না। এরইমধ্যে আজ কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়ে ২৩৯ টাকা ২০ পয়সা বা দিনের সর্বোচ্চ সীমায় চলে গেছে। দিনের সর্বোচ্চ দামে বিপুল শেয়ার কেনার আদেশ থাকলেও বিক্রিয় আদেশের ঘর শূন্য পড়ে রয়েছে।
এর আগে গত সপ্তাহজুড়ে ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ারের দাম বাড়ে ৫০ দশমিক ৮৯ শতাংশ। টাকার অঙ্কে প্রতিটি শেয়ারের দাম বাড়ে ৭৪ টাকা ২০ পয়সা।
ডিএসই থেকে প্রথম দফায় যখন বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করে বার্তা প্রকাশ করা হয়, সে সময় কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ১২৫ টাকা ৫০ পয়সা। অর্থাৎ ডিএসই থেকে সতর্ক বার্তা প্রকাশের পর কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম এরইমধ্যে বেড়েছে ১১৩ টাকা ৭০ পয়সা।
শেয়ারের এমন দাম বাড়া কোম্পানিটি সর্বশেষ ২০২১ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত বছরের জন্য বিনিয়োগকারীদের ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। এর আগে ২০২০ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত বছরেও কোম্পানিটি ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়। তার আগে ২০১৯ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত বছরে বিনিয়োগকারীদের ১৪ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি।
সর্বশেষ প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোম্পানিটি ২০২১ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত নয় মাসের ব্যবসায় শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ১২ পয়সা মুনাফা করেছে। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয় ২৬ পয়সা।
২০ কোটি ৩৬ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের এই কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ২ কোটি ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৭৬০টি। এর মধ্যে ৪০ দশমিক ৬১ শতাংশ শেয়ার আছে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের হাতে। বাকি শেয়ারের মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে আছে ৩৯ দশমিক ৮২ শতাংশ। আর ১৯ দশমিক ২৮ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী এবং শূন্য দশমিক ২৯ শতাংশ আছে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে।