রবিবার , ৩০ অক্টোবর ২০২২ | ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. উপ-সম্পাদকীয়
  5. কৃষি ও প্রকৃতি
  6. ক্যাম্পাস
  7. খেলাধুলা
  8. চাকরি
  9. জাতীয়
  10. জীবনযাপন
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দেশগ্রাম
  13. দেশজুড়ে
  14. ধর্ম
  15. নারী ও শিশু

ভারতে আঞ্চলিক বৈষম্য রূপ নিতে পারে রাজনৈতিক সংকটে

প্রতিবেদক
নিউজ ডেস্ক
অক্টোবর ৩০, ২০২২ ১০:৪৪ পূর্বাহ্ণ

ভারতের পশ্চিমাঞ্চলের রাজ্য গোয়া। সমুদ্রসৈকতের জন্য এর খ্যাতি রয়েছে। সেখানে রয়েছে উন্নত জীবনযাপনের ব্যবস্থা। অন্যদিকে ভারতের উত্তরে অবস্থিত বিহার। যেখানের নাগরিকরা নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। অনেক ভারতীয়রাই মনে করেন এটা হচ্ছে বৈষম্য ও আইনহীনতার ভূমি। অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে গোয়া ও বিহারের মধ্যে বিস্তর ব্যবধান। দক্ষিণাঞ্চলের ইউরোপ ও সাব-সাহারান আফ্রিকার মধ্যে যেমন পার্থক্য ভারতের রাজ্য দুইটির মধ্যেও তেমন পার্থক্য।

ভারতের এই দুইটি রাজ্য যদি আলাদা দেশ হতো তাহলে অর্থনৈতিকভাবে গোয়া হতো উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ। বিপরীতে বিহার হতো নিম্ন আয়ের দেশ থেকেও অনেক দূরে। গোয়া বিহারের চেয়ে গড়ে ১০ গুণ বেশি ধনী। ভারতে রাজ্যেগুলোর বৈষম্য চীনের থেকে অনেক বেশি। কারণ সেখানে সবচেয়ে ধনী প্রদেশের বার্ষিক উৎপাদন দরিদ্রের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্যগুলোর মধ্যেও অবশ্য এত ব্যবধান নেই। কারণ সেখানের সবচেয়ে গরিব রাজ্য মিসিসিপির চেয়ে নিউইয়র্ক দুই গুণ বেশি ধনী।

গত কয়েক দশকে অর্থনৈতিকভাবে ব্যাপক উন্নতি করেছে ভারত। ১৯৮০ সাল থেকে জনপ্রতি এর জিডিপি বার্ষিক গড় হার প্রায় সাত শতাংশ বেড়েছে। হাতে গোনা কয়েকটি দেশ এমন সাফল্য পেয়েছে। তবে দেশটির ধারাবাহিক আঞ্চলিক বৈষম্য, রাজ্যভিত্তিক রাজনৈতিক কোন্দল ভারতের ঐক্য ও রাজনৈতিক বিভাজনকে অবনতি করতে পারে। এতে দেশটির অর্থনেতিক প্রবৃদ্ধি ধাক্কা খেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

গত চার দশকে ভারতের অধিকাংশ অর্থনৈতিক উন্নয়ন এসেছে দক্ষিণ ও উত্তরের রাজ্যগুলো থেকে, যা উত্পাদন ও উচ্চ প্রযুক্তির শিল্পের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। কিন্তু গাঙ্গেয় সমভূমির প্রাণকেন্দ্র রাজ্যগুলোতে এ ধরনের শিল্পের তেমন কোনো বিকাশ ঘটেনি। যদিও সাম্প্রতিক দশকগুলোতে দরিদ্র ও ধনী দেশে আয়ের মধ্যে অভিন্নতা দেখা গেছে। কিন্তু ভারতের মধ্যে এই প্রক্রিয়া ব্যর্থ হয়েছে।

বিভিন্ন সংস্কৃতি ও ভাষা নিয়ে ভারত বড় একটি দেশ। আঞ্চলিক দলগুলো যারা ধনী দক্ষিণের রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার করে, তারা তাদের কষ্টার্জিত অর্জনকে উত্তরের দরিদ্রের কল্যাণমূলক কর্মসূচিতে সরিয়ে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ। উত্তরে অধিকাংশ রাজ্যে ক্ষমতায় রয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। তাছাড়া দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারেও আট বছর ধরে রয়েছে নরেন্দ্র মোদী।

জনসংখ্যার কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করছে। ভারতের উত্তর, উত্তর-পশ্চিম ও পূর্বের দরিদ্র রাজ্যগুলোতে (বিহার, ঝাড়খণ্ড, রাজস্থান, পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তরপ্রদেশ) ৬০ কোটি মানুষ বাস করে, যা দেশটির মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ। এখানের জনসংখ্যা দক্ষিণ বা পশ্চিমের রাজ্যগুলোর চেয়ে দ্রুত গতিতে বাড়ছে। ২০১০ সালে বিহারে জনসংখ্যা বাড়ে ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ ও উত্তর প্রদেশে বাড়ে ১৪ শতাংশ। কিন্তু একই সময়ে মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, কেরালা ও তামিলনাড়ুতে জনসংখ্যা বেড়েছে ১০ শতাংশেরও কম।

ভারতের জনসংখ্যার প্রায় ১৭ শতাংশ বাস করে উত্তরপ্রদেশে। কিন্তু সেখানে শিল্প ক্ষেত্রে চাকরি রয়েছে মাত্র ৯ শতাংশ। মূলত এই ক্ষেত্রে ভারতের অর্ধেকের বেশি চাকরি রয়েছে মাত্র ছয়টি রাজ্যে। ভারতে অ্যাপলের জন্য পণ্য তেরি করে ১১ কোম্পানি, যার মাত্র একটি রয়েছে উত্তরে। এসব কোম্পানির বেশি রয়েছে তামিলনাড়ুতে।

উত্তরের অধিকাংশ তরুণরাই ভালো চাকরি পায় না। তাই দেশটির ভারসাম্যহীন জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক প্রক্রিয়া রাজনৈতিক সংখটে রূপ নিতে পারে।

সর্বশেষ - আইন-আদালত