ওষুধে ভেজালকারীদের সতর্ক করলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি জানিয়েছেন, “ওষুধে ভেজালকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডসহ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে । ‘স্পেশাল পাওয়ার এক্ট-১৯৭২’-এ এ ধরনের শাস্তি রয়েছে।” আজ রবিবার জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসনের ওয়ার্কার্স পার্টির সদস্য লুৎফুন নেসা খানের এক প্রশ্নের উত্তরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী একথা জানান। এসময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘ভেজাল ওষুধ তৈরি ও বাজারজাত করা হয় সেটা আমরাও জানি। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে হয়, একদম হয় না তা বলবো না। আমাদের দেশে প্রায় ৯৮ শতাংশ ওষুধ তৈরি হয় এবং প্রায় ৬৩টি দেশে তা রফতানি করা হচ্ছে। তবে ভেজাল ওষুধ নিয়ন্ত্রণের জন্য ওষুধ প্রশাসন কাজ করে থাকে। ওষুধ প্রশাসনের অনেক ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে, যাতে কেউ নকল ওষুধ তৈরি ও বাজারজাত করতে না পারে। ওষুধে ভেজাল হলে রোগী মৃত্যুমুখে পতিত হবে তো বটেই। শুধু তাই না তার কিডনি ফেইলিয়র হবে, নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেবে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “ভেজাল ওষুধ প্রতিরোধে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ওষুধে ভেজালকারীদের অপরাধী হিসেবে বিবেচনা করে ‘দি ড্রাগস এক্ট-১৯৪৮’, ‘ড্রাগস অর্ডিনেন্স -১৯৫৮’ রোহিতকল্পে ওষুধ আইন-২০২২ এর একটি খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। যা মন্ত্রীসভা বৈঠকে অনুমোদিত হয়েছে। তা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানোও হয়েছে। এ আইনে যে ধারাগুলো রয়েছে- যারা লাইসেন্স ছাড়া ওষুধ উৎপাদন করবে তাদের ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। লাইসেন্স ছাড়া ইন্টারনেটে বা যে কোনোভাবে ওষুধ বিক্রি করলে তার জন্য ৫ লাখ টাকা জরিমানা ও ৫ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা আছে। আর যদি লাইসেন্স ছাড়া ওষুধ আমদানি করে তার জন্য ১০ বছরের জেল ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে বলে জানান তিনি। যাতে নকল ও ভেজাল ওষুধ তৈরি না হয় ও বিক্রি করতে না পারে।”
তিনি বলেন, ‘তা ছাড়া ড্রাগ কন্ট্রোল অব অর্ডিনেন্স-১৯৮২ অনুরূপ জেলা ও দায়রা জজের সমন্বয়ে ওষুধ আদালতের সমন্বয়ে ৬২টি ধারা সমন্বতি করা হয়েছে, সেখানে তাদের বিচার করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ওষুধ প্রশাসন দ্বারা ড্রাগ কোর্টে মামলা করা হয়েছে ১০১টি, ম্যাজিট্রেট কোর্টে মামলা হয়েছে ৩০০টি, মোবাইল কোর্টে মামলা হয়েছে প্রায় ৮ হাজারটি। জরিমানা করেছি প্রায় ৩৬ কোটি টাকা আর কারাদণ্ড হয়েছে প্রায় ২০০ জনকে। ওষুধ জব্দ করা হয়েছে প্রায় ৮০ কোটি টাকার। আমাদের ওষুধ প্রশাসনকে শক্তিশালী করার জন্য জনবল কাঠামো বাড়িয়ে ৩০০ থেকে ১ হাজারে উর্ন্নীত করা হয়েছে।’