প্রথম তিন ম্যাচ হারা কুমিল্লাই শেষ পর্যন্ত আর এক ম্যাচও না হেরে চ্যাম্পিয়ন। অথচ এমন অনিশ্চিত সূচনায় হতচকিত হয়ে পড়ারই কথা। কিন্তু এ কী হলো? কাগজে-কলমে এক নম্বর দল নিয়েও প্রথম তিন ম্যাচে হার, এবার বুঝি আর হলো না- এমন চিন্তার উদ্রেক ঘটারও কথা। কিন্তু কুমিল্লার মালিকপক্ষ, কোচ ও অধিনায়ক একবারের জন্য আত্মবিশ্বাস হারাননি। তাদের বিশ্বাস ও আস্থা ছিল, শুরু যত খারাপই হোক না কেন- এ দল নিয়েই ফাইনাল খেলা সম্ভব।
বৃহস্পতিবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে সিলেট স্ট্রাইকার্সকে হারিয়ে চতুর্থবারের মতো বিপিএল ট্রফি জেতার পর সংবাদ সম্মেলনে খুব গুছিয়ে সেসব কথাই জানালেন কুমিল্লার স্বত্বাধিকারী নাফীসা কামাল।
জানালেন, আমরা প্রথম তিন ম্যাচ হারের পর চট্টগ্রামে বসে মিটিং করেছি। কী করলে সংকট, বিপদ আর বিপর্যয় কাটিয়ে আবার ছন্দে ফেরা যায় এবং মূল লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব- সেসব নিয়ে কথা বলে লক্ষ্য স্থির করেছি।
নাফীসা কামালের দাবি, তারা একটা লক্ষ্য ও পরিকল্পনায় এগোনোর চেষ্টা করেছেন। সমুদয় কর্মকাণ্ড ও কার্যকম ছিল একদম সাজানো গোছানো।
নাফীসা কামাল জোর দিয়ে বলেন, তাদের লক্ষ্য ছিল ট্রফি জেতা। এবং কীভাবে সে লক্ষ্য পূরণ হয়, সে চিন্তা ও ছক কষার চেষ্টাই ছিল তাদের।
কেউ কেউ এবারের বিপিএলকে কটাক্ষ ও ব্যঙ্গ করে ‘খ্যাপ টুর্নামেন্ট ’ বলে অভিহিত করছেন। খেলোয়াড়রা যেমন আজ এখানে, কাল সেখানে আর পরশু অন্যখানে ‘খ্যাপ খেলতে যান’- এবারের বিপিএলের ভিনদেশি ক্রিকেটারদের অবস্থাও ছিল তা-ই। পুরো আসরে কোনো দলের ভিনদেশি ক্রিকেটারের স্থিতি ছিল না। বেশিরভাগ ভিনদেশি আজ এসেছেন তো আবার টুর্নামেন্টের মাঝে চলেও গেছেন। দলগুলোতে বদলি হিসেবে নতুন বিদেশি খেলোয়াড়ও এসেছেন ধারাবাহিকভাবে। এতে দলগুলোর শক্তির ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে। কমবেশি সব দলই ভুগেছে। তাদের শক্তি ক্ষয় হয়েছে।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সও এর বাইরে ছিল না। তাদের তিন পাকিস্তানি তারকা মোহাম্মদ রিজওয়ান, খুশদিল শাহ ও নাসিম শাহ পাকিস্তানের পিএসএল খেলতে বিপিএলের ভাইটাল সময়ে ফিরে গেছেন নিজ দেশে। কিন্তু তারপরও কুমিল্লার শক্তি ক্ষয় হয়নি একচুলও।
দলটির ফ্র্যাঞ্চাইজিরা উড়িয়ে এনেছেন টি টোয়েনিট ক্রিকেটের তিন ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর’ আন্দ্রে রাসেল, সুনিল নারিন আর মঈন আলিকে। সঙ্গে আরেক ক্যারিবিয় মারকুটে ব্যাটার জনসন চার্লসকেও। শেষ পর্যন্ত সেই চার্লস-মঈনদের হাত ধরেই শিরোপা উদযাপন করলো কুমিল্লা।
নাফীসা কামাল বলেন, আমরা জানতাম আমাদের ফরেন প্লেয়াররা কে কবে যাবে, আর তাদের জায়গায় কারা কে কখন আসবেন? সব ঠিক করাই ছিল। আমরা একটুও অস্থিতিশীল ছিলাম না। সব আগে থেকে ঠিক করা ছিল।
তার দাবি , ফ্র্যাঞ্চাইজি মানে তিনি নিজে, কোচ সালাউদ্দীন আর ক্যাপ্টেন ইমরুল কায়েস মিলে একটা ইউনিট। তারা নিজেরা লক্ষ্য ও পরিকল্পনা আঁটেন। ফরেন ক্রিকেটাররা অনেক আাগেই চুক্তি করে রাখেন।
মঈন আলি আর সুনিল নারিন কবে আসবেন এবং কোয়ালিফায়ার ও এলিমিনেটর পর্বে এবং ফাইনাল খেলার জন্য আসবেন, এভাবেই তাদের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছিল।