পেশাগত কাজের অতিরিক্ত চাপ, গবেষণা সম্পর্কিত জ্ঞানের অভাব, অনুদান না থাকা চিকিৎসকদের গবেষণায় অংশগ্রহণের বাধা বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে।
বাংলাদেশের চারটি টারশিয়ারি কেয়ার হাসপাতালের মোট ৫০০ জন চিকিৎসকের ওপর চালানো এ গবেষণায় দেখা যায়, যদিও চিকিৎসকদের গবেষণা সম্পর্কে কিছু ধারণা রয়েছে, তবে তাদের মাত্র ১২.৮ শতাংশ আন্তর্জাতিক জার্নালে ম্যানুস্ক্রিপ্ট জমা দিয়েছেন। প্রায় ৩.৮ শতাংশ চিকিৎসকের গবেষণা ম্যানুস্ক্রিপ্ট লেখার অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং ১৫.৬ শতাংশ চিকিৎসক এসপিএসএস বা এস টা টা এর মতো পরিসংখ্যানগত সফটওয়্যার ব্যবহার করতে পারেন।
সোমবার (৩১ জুলাই) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) শহীদ ডা. মিল্টন হলে ‘চিকিৎসকদের গবেষণায় সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি: চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ-সুবিধা’ শীর্ষক এক গবেষণা কর্মশালা ও সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। ডিপার্টমেন্ট অব পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগ ও ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেল, রিসার্চ সেলের যৌথ উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ডিপার্টমেন্ট অব পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্সর চেয়ারম্যান এবং প্রিভেন্টিভ অ্যান্ড সোশ্যাল মেডিসিন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. আতিকুল হক গবেষণায় চিকিৎসকদের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধির উপর চলমান গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন। তাতে বলা হয়, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি এবং নতুন উদ্যোগ প্রণয়নের জন্য গবেষণা অপরিহার্য।
গবেষণা বৃদ্ধিতে প্রস্তাবিত সুপারিশগুলি ছিল গবেষণা অনুদান প্রস্তাবনা লেখার বিষয়ে চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ এবং একাডেমিয়ায় একটি গবেষণা সংস্কৃতির সামগ্রিক প্রতিষ্ঠা ও প্রচার নিশ্চিত করা।
উক্ত সেমিনার ও কর্মশালায় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশে স্বাস্থ্য খাতে গবেষণার বিষয়ে মূল বক্তব্য রাখেন। তিনি চিকিৎসকদের মধ্যে দক্ষতা বৃদ্ধি, তথ্য আদান-প্রদান, নিয়ম-নীতি বিষয়ক সহায়তা এবং সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বসহ গবেষণার কাজ বাড়ানোর জন্য বেশ কিছু প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় বেশ কিছু উদ্যোগ বাস্তবায়নের মাধ্যমে গবেষণা সংস্কৃতি বিকাশে কাজ করছে। বাংলাদেশ স্বাস্থ্য খাতে একটি সমৃদ্ধ গবেষণা সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে, যার ফলে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা, উদ্ভাবনী রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা এবং কার্যকরভাবে দেশের স্বাস্থ্য খাতে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার ক্ষমতা বৃদ্ধি করা সম্ভব।
এসময় প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ, সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান, বিইউএইচএস-এর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. ফরিদুল আলম, বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ এর কনভেনর অধ্যাপক ডা. আহমেদ মোস্তাক রাজা চৌধুরী, ইউজিসির অধ্যাপক ডা. সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ শাখার গবেষণা ও প্রকাশনা বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. এম মোস্তফা জামানসহ দেশের স্বনামধন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞ আলোচকরা বক্তব্য রাখেন। সঞ্চালনা করেন পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স ডিপার্টমেন্টের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফারিহা হাসিন।