রাজধানীর কাফরুলের ইব্রাহিমপুরে ফ্ল্যাট বিক্রির টাকা হাতিয়ে নিতে মাকে মারধরের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তিন সন্তানকে আগাম জামিন দেননি হাইকোর্ট। তাদের করা জামিন আবেদন উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ (নটপ্রেস রিজেক্ট) করেছেন আদালত।
এর ফলে তাদের আত্মসমর্পণ করতে হবে। এছাড়াও তারা যেকোনো সময় গ্রেফতার হতে পারেন বলেও জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী।
অভিযুক্তরা হলেন- হামিদুল হক সোহেল (৪৫), তাসলিমা আক্তার সুমি (৪২) ও সেলিম রেজা (৪৭)।
এক বৃদ্ধা মায়ের করা মামলায় আগাম জামিন চেয়ে তাদের করা আবেদনের শুনানি শেষে রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আদালতে আজ জামিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।
অ্যাডভোকেট আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, আদালত আসামিদের জামিন আবেদন উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দিয়েছেন। অর্থাৎ তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর হয়েছে। এদিন সন্তানদের আগাম জামিন ঠেকাতে হাইকোর্টে ৭২ বছর বয়সী এক মা উপস্থিত হয়েছিলেন। খুরশিদা আক্তার নামের সেই বৃদ্ধা হাইকোর্টকে জানান, তার দুই সন্তানকে জামিন দিলে তাকে তারা মেরে ফেলবে। তিনি আরও জানান, তার দুই ছেলে-মেয়ে সরকারি কর্মকর্তা হয়েও সম্পত্তির জন্য তাকে মারধর করেন।
আমিন উদ্দিন মানিক আরও বলেন, যেখানে বৃদ্ধ বয়সে মা-বাবাকে সন্তানদের দেখাশোনা করার কথা, সেখানে সম্পত্তির জন্য মারধর করে। এর আগে খুরশিদা আক্তার কিছু সম্পত্তি বিক্রি করলে, সেই টাকা নেওয়ার জন্যও সন্তানেরা তাকে মারধর করেন। এর মেডিকেল সার্টিফিকেটও তিনি জমা দিয়েছেন।
বিষয়টি আদালতকে জানিয়েছি আমরা। একই সঙ্গে আমরা আদালতের কাছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছি। পরে হাইকোর্ট তাদের জামিন নামঞ্জুর করেন এবং দৃঢ়ভাবে বলেছেন তাদের জামিন দেওয়া সম্ভব না।
এই সময় সেই বৃদ্ধার সন্তানদের আইনজীবী আদালতকে জানান, আরেক মেয়ের ইন্ধনে খুরশিদা আক্তার এই মামলা করেছেন। এ মামলার আগে তারা মায়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। এ সময় আসামিদের ভর্ৎসনা করে হাইকোর্ট বলেন, যে সন্তান মায়ের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে, সে কোনোভাবেই ভালো হতে পারে না।
