তৈরি পোশাক শিল্পকে ব্র্যান্ডিং করার পাশাপাশি সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশকে ব্র্যান্ডিং করার ক্ষেত্রেও উদ্যোগ নিয়েছে তৈরি পোশাক শিল্প মালিক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। এই ব্র্যান্ডিয়ের অংশ হিসেবেই সম্প্রতি বিজিএমইএ মেইড ইন বাংলাদেশ উইকের আয়োজন করেছে।
রোববার (২০ নভেম্বর) উত্তরা বিজিএমইএ কার্যালয়ে ‘দেশকে ব্র্যান্ডিং করতে বিজিএমইএ’র উদ্যোগ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সংগঠনটির সভাপতি ফারুক হাসান।
তিনি বলেন, সম্প্রতি বিজিএমইএয়ের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হওয়া মেইড ইন বাংলাদেশ উইকে নানা ইভেন্টের আয়োজন করেছিলাম। সেখানে আমরা প্রথমবারের মতো একটি ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতার আয়োজন করি। যেখানে প্রতিযোগীরা তিনটি বিভাগে- সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য, শিল্প ও অর্থনীতি এবং মানুষ ও ল্যান্ডস্কেপ বিষয়ে ছবি জমা দেন। সেখান থেকে আমরা ছয়জন আলোকচিত্রীকে (ফটোগ্রাফার) ‘মেইড ইন বাংলাদেশ ফটোগ্রাফি অ্যাওয়ার্ড’ সম্মাননা দিয়েছি। যারা তাদের সৃজনশীলতার সবটুকু দিয়ে অপরূপ বাংলাদেশকে লেন্সে ধারণ করেছেন।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, এই ধরনের ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আমরা আলোকচিত্রীদের সেই মুহূর্ত, দৃশ্য ও চিত্রগুলো ক্যাপচার করতে উৎসাহিত করতে চাই, যেগুলো বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্র্যান্ডিং করতে ও ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ বিশ্বের দরবারে একটি মর্যাদাপূর্ণ ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে অবদান রাখবে।
‘বিশ্বায়ন ও তথ্যপ্রযুক্তির উৎকর্ষতার কারণে ন্যাশন ব্র্যান্ডিংয়ের গুরুত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিপন্ন সবকিছুর সঙ্গেই ব্র্যান্ড শব্দটি জড়িত। এর মাধ্যমে জানা যায়- একটি দেশ তার নাগরিকদের কেমন রেখেছে ও বিশ্ববাসী সেভাবেই দেশটিকে দেখে। রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক স্তম্ভে প্রলেপ দেওয়ার কাজটিও করে ন্যাশন ব্র্যান্ডিং।’
ফারুক হাসান বলেন, ব্র্যান্ডিং শক্তিশালী হলে আন্তর্জাতিক বাজারে ক্রেতারা ভালো মূল্য অফার করেন, ক্রেতাদের সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে উঠে। একই সঙ্গে উদীয়মান বাজারগুলোতে প্রবেশাধিকার পাওয়া সহজ হয়। ন্যাশন ব্র্যান্ডিংয়ের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত দেশের রপ্তানি, পর্যটন, দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ, দেশের ইতিবাচক ও সঠিক ভাবমূর্তি, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নতি করে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বে প্রায় ১৯৫টি দেশ রয়েছে, যারা নিজ নিজ দেশে বিদেশি বিনিয়োগ ও পর্যটক আকর্ষণ করার জন্য তীব্র প্রতিযোগিতায় লিপ্ত রয়েছে। তাই এখনই উপযুক্ত সময় ন্যাশন ব্র্যান্ডিং কৌশল বিষয়ে পরিকল্পনা করার জন্য।
সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ নেতারা বলেন, আমরা বিশ্বাস করি যে, ব্র্যান্ডিংয়ের সঙ্গে দেশের নাগরিকদের যুক্ত করতে হবে এবং এক্ষেত্রে মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটাতে হবে। যেন দেশের একজন নাগরিক হিসেবে সে গর্ব অনুভব করতে পারে। ন্যাশন ব্র্যান্ডিংয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বসবাসকারী বাংলাদেশিদেরও সম্পৃক্ত করতে হবে। কারণ প্রবাসে বসবাসরত বাংলাদেশিরা দেশ থেকে বহুদূরে অবস্থান করলেও তাদের অন্তরের মণিকোঠায় রয়েছে মাতৃভূমি বাংলাদেশ।
মেইড ইন বাংলাদেশ উইকে আমরা প্রথমবারের মতো বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য ইন্টেলের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ওমর ইশরাক, আল হারামাইন পারফিউমস গ্রুপ অব কোম্পানির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং এনআরবি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাহতাবুর রহমান (নাসির) ও মাস্টারশেফ অষ্ট্রেলিয়ার অন্যতম গ্র্যান্ড ফাইনালিস্ট, কিশওয়ার চৌধুরীকে তাদের অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ এনআরবি অ্যাওয়ার্ড সম্মাননা প্রদান করেছি।