সোমবার , ১২ ডিসেম্বর ২০২২ | ৩০শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. উপ-সম্পাদকীয়
  5. কৃষি ও প্রকৃতি
  6. ক্যাম্পাস
  7. খেলাধুলা
  8. চাকরি
  9. জাতীয়
  10. জীবনযাপন
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দেশগ্রাম
  13. দেশজুড়ে
  14. ধর্ম
  15. নারী ও শিশু

গণতন্ত্র মঞ্চের ১৪ দফায় কী আছে

প্রতিবেদক
নিউজ ডেস্ক
ডিসেম্বর ১২, ২০২২ ৪:৩৬ অপরাহ্ণ

সরকার হটাতে যুগপৎ আন্দোলন ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার পরিবর্তনে ১৪ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ। এই ১৪ দফার আলোকেই  বিএনপির সঙ্গে ‘যুগপৎ আন্দোলনে’র কর্মসূচিতে মাঠে নামবে তারা।

সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না এই ১৪ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

সরকার পতনে বিএনপি ১০ দফা দাবি দিয়েছে। রাষ্ট্র সংস্কারে ২৭ দফা দাবি চূড়ান্ত করা হলেও তা ঘোষণা করেনি দলটি। তবে গণতন্ত্র মঞ্চ সরকার পতনের পাশাপাশি রাষ্ট্র সংস্কার মিলিয়ে ১৪ দফা দাবি পেশ করে।

সংবাদ সম্মেলনে মান্না বলেন, আমরা রাষ্ট্রের একটা কোয়ালেটেটিভ চেঞ্জ চাই। এজন্য আমরা ১৪ দফা দিচ্ছি। আপনাদের মনে আছে কিনা জানি না, প্রয়াত আকবর আলি খান বলেছিলেন যে, এই সংবিধান আমাদের প্রধানমন্ত্রী একটা জার বা মোগল সম্রাটের মতো ক্ষমতাশালী বানিয়েছে। এখন আমরা দেখছি তিনি তার চেয়েও বেশি শক্তিশালী, উনি যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন। এটা তো থাকতে পারে না, সংবিধান সংশোধন করতে হবে। এ রকম করে সামগ্রিকভাবে মানুষের গণতান্ত্রিক মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা, তার অর্থনৈতিক সচ্ছলতা নিয়ে আসার সব কিছু করার জন্য আমরা মনে করি যে, এই রাষ্ট্রের প্রশাসন এবং আইনের বা সংবিধানের যথেষ্ট সংস্কার করতে হবে। ১৪ দফার আলোকেই বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করা হবে।

এ সময় মঞ্চের আরেক নেতা ও গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, বিএনপির সঙ্গে একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের ব্যাপারে তারা সম্মত হয়েছেন। দ্রুতই তা হবে। সেই কমিটি থেকেই যুগপৎ আন্দোলন ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনার বিষয়ে দিকনির্দেশনা আসবে।

গণতন্ত্র মঞ্চের সংবাদ সম্মেলনে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী যুগপৎ আন্দোলন, সরকার ও শাসনব্যবস্থা বদলের ১৪ দফা’ শিরোনামে তাদের দাবি পেশ করা হয়।

দাবিগুলো হচ্ছে— বর্তমান সংসদ বিলুপ্ত করা, সরকারকে অনতিবিলম্বে পদত্যাগ করা, অবাধ, নিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় নির্বাচনের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা, বর্তমান নির্বাচন কমিশন বাতিল করে গ্রহণযোগ্য একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করা, নির্বাচনে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিশ্চিত করতে নির্বাচনে টাকার খেলা ও মনোনয়ন বাণিজ্য বন্ধ করা, আরপিও সংশোধন করা, প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক পরিবর্তন করা, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পদ্ধতি বাতিল করে পেপার ব্যালটের মাধ্যমে ভোটের সুষ্ঠু ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক বাতিল করা।

এ ছাড়া সংসদ, নির্বাহী বিভাগ ও বিচার বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করা, ন্যায়পাল ও সাংবিধানিক আদালত প্রতিষ্ঠা করা, সংবিধানের ৭০তম অনুচ্ছেদের সংস্কার করে সরকার গঠনে আস্থাভোট ও বাজেট পাস ছাড়া সব বিলে স্বাধীন মতামত দেওয়ার সুযোগ করা।

প্রত্যক্ষ নির্বাচনের পাশাপাশি সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি ও দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট ব্যবস্থা প্রবর্তন করা এবং প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার যৌক্তিক ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করা।

এসবের পাশাপাশি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ সব রাজনৈতিক কারাবন্দির নিঃশর্ত মুক্তি, সাংবিধানিক অধিকার হিসেবে সভা, সমাবেশ, মিছিলসহ সব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে কোনো বাধা সৃষ্টি না করা, বিরোধী দলের কর্মসূচিতে পুলিশি বাধা, হামলা, গ্রেফতার, মিথ্যা মামলা বেআইনি হিসেবে গণ্য করা।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এবং বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪ সহ মৌলিক নিবর্তনমূলক কালাকানুন বাতিল করার পাশাপাশি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশি ব্যবস্থার নামে শ্রমিক আন্দোলনে নেতাকর্মীদের হয়রানি বন্ধ করা।

জরুরি ভিত্তিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনা, গরিব ও সীমিত আয়ের মানুষের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা ও নগদ অর্থ প্রদানের ব্যবস্থা চালু করতে হবে।

গ্যাস, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পানিসহ সেবামূলক খাতসমূহে স্বেচ্ছাচারী মূল্যবৃদ্ধির সরকারি সিদ্ধান্ত বাতিল করা ও রেন্টাল-কুইক রেন্টাল প্রকল্পে দেওয়া দায়মুক্তি আইন বাতিল করা।

গত ১৫ বছরে বিদেশে অর্থপাচার, ব্যাংকিং, শেয়ার মার্কেটসহ রাষ্ট্রীয় দুর্নীতিবাজদের চিহ্নিত করতে শক্তিশালী কমিশন গঠন। দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুততম সময়ের মধ্যে যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা। দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ-সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার ব্যবস্থা করা।

গুমের শিকার সব নাগরিকদের উদ্ধার ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ করা। স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে জিডিপির ন্যূনতম ৬ শতাংশ বরাদ্দ করা। কৃষকের ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত, পাটকল-চিনিকলসহ বন্ধ কলকারখানা চালু করা।

তোপখানা রোডে বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদের মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, বহ্নি শিখা জামালী, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, আবুল হাসান রুবেল, জেএসডির শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নুর, রাশেদ খান, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাউয়ুম, ইমরান ইমন, ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, হাবিবুর রহমান রিজু, নাগরিক ঐক্যের শহীদুল্লাহ কায়সার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

সর্বশেষ - সারাদেশ