বুধবার , ৯ নভেম্বর ২০২২ | ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. উপ-সম্পাদকীয়
  5. কৃষি ও প্রকৃতি
  6. ক্যাম্পাস
  7. খেলাধুলা
  8. চাকরি
  9. জাতীয়
  10. জীবনযাপন
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দেশগ্রাম
  13. দেশজুড়ে
  14. ধর্ম
  15. নারী ও শিশু

রংপুরে ধান সংগ্রহ অভিযান শতভাগ সফল না হলেও মজুত পর্যাপ্ত

প্রতিবেদক
নিউজ ডেস্ক
নভেম্বর ৯, ২০২২ ৬:১০ পূর্বাহ্ণ

রংপুর বিভাগের আট জেলায় গত দুই (আমন-বোরো) মৌসুমে সরকারিভাবে অভ্যন্তরীণ ধান সংগ্রহ অভিযান শতভাগ সফল হয়নি। গত আমন মৌসুমে চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেলেও ধানে ব্যর্থ হয়েছে খাদ্য বিভাগ। তবে বোরো মৌসুমে ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা কিছুটা বাড়লেও চালে শতভাগ পূরণ হয়নি লক্ষ্যমাত্রা। সেইসঙ্গে গম সংগ্রহ অভিযানে সফল হতে পারেননি তারা।

এ অবস্থায় খাদ্য বিভাগ বলছে, যথেষ্ট পরিমাণে চালের মুজত রয়েছে।

রংপুর বিভাগীয় খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, নীলফামারী, রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধাসহ আট জেলায় সরকারিভাবে আমন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬২ হাজার ৬৫৬ মেট্রিক টন। ২০২১ সালের ৭ নভেম্বর থেকে ২০২২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নির্ধারিত সময়ে সেখানে অর্জিত হয়েছে ১৫ হাজার ১২৭ দশমিক ৬৮০ মেট্রিক টন, যা লক্ষ্যমাত্রার ২৪ দশমিক ১৪ শতাংশ। এর মধ্যে সবচেয়ে কম সংগ্রহ হয়েছে রংপুর জেলা থেকে। এ জেলার লক্ষ্যমাত্রা ১০ হাজার ১৪৯ মেট্রিক টন হলেও অর্জিত হয়েছে মাত্র ৩২ মেট্রিক টন, যা লক্ষ্যমাত্রার শূন্য দশমিক ৩২ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি অর্জিত হয়েছে গাইবান্ধা জেলায়। এ জেলায় ৭ হাজার ৪৪৬ মেট্রিক টনের বিপরীতে অর্জিত হয়েছে ৫ হাজার ৩১ মেট্রিক টন, যা লক্ষ্যমাত্রার শতকরা ৬৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ।

অপরদিকে সিদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক লাখ ২৩ হাজার ৮৩৯ মেট্রিক টন। এর বিপরীতে অর্জিত হয়েছে এক লাখ ৮৩ হাজার ৮৭০ দশমিক ২১০ মেট্রিক টন, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ বেশি।

আমন মৌসুমে চাল সংগ্রহে সফল হলেও ধান ক্রয়ের ব্যর্থতা নিয়ে চলতি বছরের ২৮ মে থেকে বোরো মৌসুমে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযানে নামে খাদ্য বিভাগ। এই বছরের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বোরো ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক লাখ ৮৯৮ মেট্রিক টন। সেখানে অর্জিত হয়েছে ৭৮ হাজার ৪৫২ দশমিক ৪৮০ মেট্রিক টন। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার শতকরা ৭৮ শতাংশ অর্জিত হয়েছে।

গড় সফলতা ভালো হলেও নীলফামারী জেলায় ধান সংগ্রহে অর্জন ছিল কম।

নীলফামারী জেলায় ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ছয় হাজার ৮২২ মেট্রিক টন। সেখানে অর্জন হয়েছে দুই হাজার ১৪১ মেট্রিক টন, যা লক্ষ্যমাত্রার শতকরা ৩১ শতাংশ। রংপুরে ১২ হাজার ১৯৯ মেট্রিক টন ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হলেও অর্জন হয়েছে ৪৯ শতাংশ। অর্থাৎ সংগ্রহ হয়েছে ছয় হাজার ২৫ মেট্রিক টন।

এছাড়াও বিভাগের আট জেলার মধ্যে শতভাগ ধান সংগ্রহের তালিকায় থাকা দুটি জেলা হলো গাইবান্ধা ও পঞ্চগড়। এছাড়া দিনাজপুর ও ঠাকুরগাঁও জেলা ৯৩ শতাংশ, কুড়িগ্রাম লক্ষ্যমাত্রার ৬২ ও লালমনিরহাটে ৫২ শতাংশ অর্জন হয়েছে।

একইসঙ্গে রংপুর বিভাগের আট জেলায় সিদ্ধ চাল ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রার প্রায় পুরোটা সফল বলে খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে। চাল সংগ্রহের ক্ষেত্রে প্রাথমিক লক্ষ্যমাত্রার পাশাপাশি অতিরিক্ত লক্ষ্যমাত্রাও নেওয়া হয়। তাতে করে নির্ধারিত ৩১ আগস্টের মধ্যে সিদ্ধ চালের মোট লক্ষ্যমাত্রা ছিল তিন লাখ ১৯ হাজার ৮০৩ মেট্রিক টন। সেখানে অর্জিত হয়েছে ২ লাখ ৯৭ হাজার ৫৩ মেট্রিক টন। অর্জনের হার ৯৩ শতাংশ। সেই সঙ্গে আতপ চালও অর্জিত হয়েছে ৯৭ শতাংশ। এই দুই মৌসুমে ২৭ টাকা কেজি দরে ধান এবং ৪০ টাকা কেজি দরে চাল কিনছে সরকার। বোরো মৌসুমে আতপ চাল কিনেছে ৩৯ টাকা কেজি দরে।

তবে ধান ও চাল সংগ্রহে প্রায় পুরোটা সফল হলেও গম সংগ্রহ অভিযান ব্যর্থ হয়েছে। চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত বিভাগের আট জেলায় গম সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৪ হাজার ৩৯৯ মেট্রিক টন। এর বিপরীতে কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড় জেলা থেকে খাদ্য বিভাগ কম কিনতে পেরেছে মাত্র ১৯ মেট্রিক টন।

রংপুর আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, নীলফামারী ও রংপুর জেলায় ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৮ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে গমের উৎপাদন ধরা হয়েছিল ৬৩ হাজার ৬৬১ মেট্রিক টন। এর বিপরীতে ১৮ হাজার ২৮৫ হেক্টর জমিতে গম উৎপাদন হয়েছে ৬৩ হাজার ৮৩০ মেট্রিক টন।

এছাড়া ২০২১-২২ অর্থবছরে ওই পাঁচ জেলায় আউশ, রোপা আমন এবং বোরো মৌসুমে ৪১ লাখ ৭ হাজার ২৫৮ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে উৎপাদন হয়েছে ৪১ লাখ ৫৩ হাজার ১৯৯ মেট্রিক টন।

রংপুর বিভাগীয় খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন গুদামে ২ লাখ ৭৭ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন চাল, তিন হাজার ৫০০ মেট্রিক টন ধান এবং তিন হাজার ৮০০ মেট্রিক টন গম মুজত রয়েছে।

রংপুর আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক আশরাফুল আলম জাগো নিউজকে বলেন, কৃষি বিভাগ থেকে উৎপাদিত ফসলের তথ্য থেকে সমন্বয় করে ধান-চাল ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।

এবার বোরো মৌসুমে বাজারদরের সঙ্গে সরকার নির্ধারিত দরের তেমন একটা হেরফের হয়নি। এছাড়া শুরু থেকেই বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করায় ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান প্রায় পুরোপুরি সফল হয়েছে।

আশরাফুল আলম আরও বলেন, যে পরিমাণ চাল মজুত রয়েছে তা দিয়ে এ অঞ্চলে সরকারি চাহিদা অনায়াসে তিন-চার মাস পূরণ করা সম্ভব। এছাড়া আগামী এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে আবারো আমন মৌসুমে ধান-চাল ক্রয় অভিযান শুরু হলে মজুতের পরিমাণ বাড়বে। পাশাপাশি চাল ও গম আমদানির বিষয়টিও তিনি উল্লেখ করেন।

গম সংগ্রহের বিষয়ে আশরাফুল আলম বলেন, বিগত সময়ে এ অঞ্চলে গম সংগ্রহ সফল হলেও এবার বাজারে দাম বেশি থাকায় তেমন একটা সংগ্রহ হয়নি। তবে আগামীতে সরকার গম ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করলে তা পূরণ করা হবে।

সর্বশেষ - দেশজুড়ে