মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় হবিগঞ্জের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবুল খায়ের গোলাপ মিয়াসহ দুইজনের বিষয়ে আসামিপক্ষের ডিফেন্স সাক্ষ্যগ্রহণের শুনানি আগামী ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছে। ওইদিন আসামির পক্ষে ডিফেন্সের সাফাই সাক্ষ্যগ্রহণ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
বুধবার (১৬ নভেম্বর) সাক্ষ্যগ্রহণের নির্ধারিত দিনে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন-বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কেএম হাফিজুল আলম।
আসামিরা হলেন-হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় গজানাইপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল খায়ের গোলাপ মিয়া (৬৬) এবং মো. জামাল উদ্দিন আহম্মদ ওরফে মো. জামাল উদ্দিন (৬৫) ।
প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন ট্রাইব্যুনালের অন্যতম সিনিয়র প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট সৈয়দ হায়দার আলী। তার সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সিমন ও রেজিয়া সুলতানা চমন। অন্যদিকে আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুস সোবহান তরফদার ও গাজী এমএইচ তামিম।
প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা জানান, মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলায় মোট আসামি ছিলেন তিনজন। এর মধ্যে গিয়াস উদ্দিন নামের এক আসামি মারা গেছেন। আর গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন অন্য দুইজন। আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করা হয়েছে। তবে আসামি পক্ষে সাফাই ডিফেন্সের একজন সাক্ষী তার জবানবিন্দ পেশ করেছেন। এ বিষয়ে আরও একজন ডিফেন্স সাক্ষীর জবানবন্দি পেশ করার জন্য আগামী ৯ জানুয়ারি দিন ঠিক করেছেন আদালত।
এর আগে ২০১৮ সালের ১৩ মে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিল করা হয়। এরপর অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে তাদের বিচারকাজ শুরু করা হয়। পরে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হলে মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আনা সাক্ষীদের মধ্যে তদন্ত কর্মকর্তাসহ প্রসিকিউটরের আনা মোট ১১ জন সাক্ষী তাদের জবানবন্দি পেশ করেন।
এদিকে আসামিপক্ষ তিনজন (ডিফেন্স) সাক্ষীর নাম জমা দিলেও এখন পর্যন্ত একজনের জবানবন্দি উপস্থাপন করেছেন। আরও সাক্ষী আনা হবে বলে সময় আবেদন করেছেন আসামির আইনজীবী। আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম মুলতবি করা হয়েছে।
২০১৮ সালের ৮ মার্চ আবুল খায়ের গোলাপ মিয়াসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে তা প্রকাশ করে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। আসামিদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৭ জনকে হত্যা, ৬ নারীকে ধর্ষণ, ২৫টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ৩০ জনকে অপহরণ-নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়। পাঁচটি অভিযোগে তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ এ মামলার মোট সাক্ষী ২৩ জন।
