লক্ষ্মীপুরে মো. সুমন মহাজন নামে এক বেদে যুবককে মারধরের পর তাদের পল্লীতে হামলার অভিযোগ উঠেছে। হামলা চালিয়ে বেদেপল্লীর দুটি সোলার প্যানেল নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এসময় দ্রুত এলাকা না ছাড়লে আগুন দিয়ে পল্লী পুড়িয়ে দেওয়ারও হুমকি দেন তারা।
এতে ভয়ে বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) ভোরে পল্লীর সব জিনিসপত্র গুছিয়ে নিতে দেখা বাসিন্দাদের। এসময় কারণ জানতে চাইলে বেদেপল্লীর সদস্যরা এমন অভিযোগ করেন।
বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) দিনগত রাত ৩টার দিকে সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের আব্দুল্লাহপুর গ্রামে লক্ষ্মীপুর-রামগতি সড়কের পাশে পরিত্যক্ত ইটভাটা এলাকার বেদেপল্লীতে এ হামলার ঘটনা ঘটে। স্থানীয় চা দোকানি মো. রকিসহ তার অনুসারীরা এ ঘটনা ঘটান বলে অভিযোগ।
বেদেরা মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং থানার বাসিন্দা। দলবদ্ধ হয়ে তারা বিভিন্ন এলাকায় কাজের সন্ধানে গিয়ে খোলা স্থানে পল্লী স্থাপন করেন। ভবানীগঞ্জে কয়েকমাস ধরে তারা পল্লী স্থাপন করে বসবাস করছেন।
বেদেপল্লীর লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পল্লীর পাশেই রকির চা দোকানে তারা মোবাইল চার্জ দিতেন। প্রতিটি মোবাইলে চার্জের জন্য পাঁচ টাকা করে রকিকে দিতে হতো। এতে মোবাইল নিজ হেফাজতে রাখার কথা দেন রকি। দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে তার দোকানে বেদেপল্লীর লোকজন মোবাইল চার্জ দিচ্ছিলেন।
বুধবার সুমনসহ দুইজন রকির দোকানে তাদের মোবাইল চার্জ দেন। পরে দুপুরে সুমন মোবাইলটি আনতে গেলে পাননি। এতে মোবাইল কোথায় তা রকিকে জিজ্ঞেস করা হয়। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে সুমনকে রকি চড়-থাপ্পড় দেন। বিকেলেও দেখতে পেয়ে সুমনকে তিনি এলোপাতাড়ি কিল-ঘুসি মারেন।
এরপরও ক্ষান্ত হননি রকি। গভীর রাতে তার অনুসারী জাবেদ ও রবিনসহ কয়েকজনকে নিয়ে বেদেপল্লীতে হামলা চালান। এসময় দুটি বেদে পরিবারের সোলার প্যানেল নিয়ে যান তারা। পল্লীতে ভাঙচুরও চালানো হয়। একপর্যায়ে এলাকা না ছাড়লে আগুন দিয়ে পল্লী পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন রকিসহ তার লোকজন।
বেদেপল্লীর বাসিন্দা আলী আহমেদ বলেন, অন্যায়ভাবে আমাদের একজনকে মারধর করা হয়েছে। রাতে হামলাকারীরা দুইটি সোলার প্যানেল নিয়ে গেছে। এখন এলাকা ছাড়ার জন্য হুমকি দিচ্ছে। তা না হলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেবে বলে গেছে। আমরা এখন কোথায়, কার কাছে যাবো?
তবে জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে চা দোকানি রকি বলেন, বেদেপল্লীতে চোর ঢুকেছিল। রাত ১টার দিকে আমরা চোর তাড়াতে গিয়েছি। বেদে সদস্যদের অভিযোগ সত্য নয়।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. হুমায়ুন কবির জানান, রকিসহ তার অনুসারীরা উচ্ছৃঙ্খল। তারা কারও কথা শোনে না। তাদের আচরণ বখাটেদের মতো।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।