সোমবার , ১৩ নভেম্বর ২০২৩ | ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. উপ-সম্পাদকীয়
  5. কৃষি ও প্রকৃতি
  6. ক্যাম্পাস
  7. খেলাধুলা
  8. চাকরি
  9. জাতীয়
  10. জীবনযাপন
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দেশগ্রাম
  13. দেশজুড়ে
  14. ধর্ম
  15. নারী ও শিশু

হরতাল-অবরোধের প্রভাব কমিউনিটি সেন্টারে, কমছে অনুষ্ঠান

প্রতিবেদক
নিউজ ডেস্ক
নভেম্বর ১৩, ২০২৩ ৮:১৭ পূর্বাহ্ণ

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর বেশি দিন বাকি নেই। নির্দলয়ী সরকারের অধীনে এ নির্বাচন চায় বিএনপি-জামায়াত। আর এ দাবিতে আন্দোলন করছে তারা। হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি দিচ্ছে। রাজনৈতিক এই কর্মসূচি কেন্দ্র করে কোথাও কোথাও যানবাহনে আগুন দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে। অনেকে আবার ভাঙচুরের আশঙ্কায় ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে বের হচ্ছেন না। খুব বেশি জরুরি না হলে সামাজিক অনুষ্ঠানেও অংশ নিচ্ছেন না। যার প্রভাব পড়েছে ঢাকার কমিউনিটি সেন্টারগুলোতে।

ঢাকা উত্তর (ডিএনসিসি) ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ২৮ অক্টোবরের পর থেকে দেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তাল। মানুষও অনুষ্ঠানে যাওয়া কমিয়ে দিয়েছে। ফলে কমিউনিটি সেন্টারগুলোতে কমেছে সামাজিক অনুষ্ঠানের হার। অনেকে আগে বুকিং দিয়ে তা বাতিল করছে। অথচ অন্যান্য বছর নভেম্বরের শুরু থেকেই কমিউনিটি সেন্টারে বুকিংয়ের চাপ থাকে। এবার চিত্র ভিন্ন। কমেছে বুকিং দেওয়া।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৩৬টি কমিউনিটি সেন্টার রয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটির। তবে তাদের এক-তৃতীয়াংশ সেন্টারে চলছে সংস্কার কাজ। বাকিগুলোতে খুব কমই বুকিং হচ্ছে। একইভাবে ডিএনসিসির ১৪টি কমিউনিটি সেন্টার আছে। এর মধ্যে বর্তমানে ৯টি সেন্টারে পুনর্মিলনী, বিয়ে, করপোরেট মিটিংসহ যে কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। বাকি পাঁচটি সেন্টার মেরামত ও সরকারি কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে।

সপ্তাহখানেক আগে বিয়ে করেন রাজধানীর গোপীবাগের বাসিন্দা সামসুল আলম। তাদের পরিকল্পনা ছিল ঘটা করে কমিউনিটি সেন্টারে বিয়ের অনুষ্ঠান করা। এজন্য মাসখানেক আগে সাদেক হোসেন খোকা কমিউনিটি সেন্টারের একটি হল রুম বুকিং দিয়েছিলেন। কথা ছিল ৭ নভেম্বর তারা সেখানে বিয়ের অনুষ্ঠান করবেন। এজন্য কনে ও বরপক্ষ মিলে প্রস্তুতিও নিয়েছিল। কিন্তু বাধ সাধে বিএনপি-জামায়াতের রাজনৈতিক কর্মসূচি। হরতাল-অবরোধে অতিথিদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে অনুষ্ঠান বাতিল করেন তারা।

সামসুল আলম জাগো নিউজকে বলেন, সাধারণত বছরের শেষদিকে শুক্র ও শনিবার কমিউনিটি সেন্টার ফাঁকা পাওয়া যায় না। এজন্য ৭ নভেম্বর দুপুরে বিয়ের অনুষ্ঠানের সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল। সে অনুযায়ী নেওয়া হয়েছিল সব প্রস্তুতিও। কিন্তু ২৮ অক্টোবরের পর থেকে মতিঝিল ও আশপাশের এলাকায় রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে থাকে। এরপর টানা হরতাল-অবরোধ শুরু হয়। তখন কমিউনিটি সেন্টারে বুকিং বাতিল করে ঘরোয়া আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেই। পরে দুই পরিবারের সবাই মিলে ঘরোয়াভাবেই বিয়ের অনুষ্ঠান করি।

পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ার ধুপখোলা মাঠের পাশে মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন কমিউনিটি সেন্টার। আধুনিক এ সেন্টারে পৃথক ফ্লোরে একসঙ্গে দুটি অনুষ্ঠান করা যায়। কিন্তু গত অক্টোবরের শেষদিকে এবং ১১ নভেম্বর পর্যন্ত এখানে শুক্র ও শনিবার ছাড়া বাকি দিন ফাঁকাই থাকছে। ফাঁকা থাকার দুটি কারণ জানিয়েছেন কমিউনিটি সেন্টারের সংশ্লিষ্টরা। তারা জানান, চলতি নভেম্বর মাসে বিএনপি-জামায়াতের অবরোধের কারণে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে কমিউনিটি সেন্টারে। আবার এখন সব স্কুলে পরীক্ষা চলায় কম হচ্ছে অনুষ্ঠান।

সাঈদ খোকন কমিউনিটি সেন্টারের তত্ত্বাবধায়ক নুরুল ইসলাম খান বলেন, সাধারণত নভেম্বরের শুরু থেকেই বুকিং বেশি থাকে। বিগত বছরগুলোতে এমনই দেখা গেছে। কিন্তু চলতি বছর এখন পর্যন্ত শুক্র ও শনিবার ছাড়া কেউ বুকিং দিচ্ছে না। আর ২৮ অক্টোবরের পর থেকে শুক্র ও শনিবার যে কয়েকটি অনুষ্ঠান কমিউনিটি সেন্টারে হয়েছে, সেগুলোতেও কাঙ্ক্ষিত অতিথি পাননি আয়োজকরা।

এদিকে মিরপুর-১৩ নম্বরে পল্লবী থানার পাশেই দুই নম্বর ওয়ার্ড কমিউনিটি সেন্টার। এ সেন্টারে আনুমানিক আসন সংখ্যা ৪০০ জনের। দিনে অনুষ্ঠানের ভাড়া আট হাজার ২৫০ টাকা। আর রাতের ভাড়া ৯ হাজার ২৫০ টাকা। তবে এখন এ কমিউনিটি সেন্টারেও শুক্র ও শনিবার ছাড়া তেমন কোনো বুকিং হচ্ছে না।

ডিএনসিসির অঞ্চল-২ এর সহকারী সমাজ কল্যাণ কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন ভূঁঞা বলেন, বিগত বছরগুলোতে এসময়ে কমিউনিটি সেন্টারে দু-এক মাস আগ থেকেই চাপ থাকে। কিন্তু এবার তেমন কোনো চাপ নেই। হরতাল-অবরোধের কারণে মানুষ সামাজিক অনুষ্ঠান করতে চাচ্ছে না। যারা আয়োজন করছেন, তারাও খুব সীমিত আকারে করছেন।

মুধবাগের বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খান কামাল কমিউনিটি সেন্টারে চলতি নভেম্বর মাসে এখন পর্যন্ত পাঁচটি অনুষ্ঠানের বুকিং হয়েছে। এছাড়া ডিসেম্বরে সাতটি অনুষ্ঠানের বুকিং রয়েছে বলে জানায় ডিএনসিসি।

জানতে চাইলে ডিএনসিসির সমাজ কল্যাণ ও বস্তি উন্নয়ন বিভাগের সমাজ কল্যাণ কর্মকর্তা মো. মুজাহিদ আল সাফিদ জাগো নিউজকে বলেন, যে কয়েকটি বুকিং হয়েছে, সেগুলো বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবারের। এর বাইরে অন্য কোনো দিন বুকিং নেই।

হরতাল-অবরোধের কারণে বুকিংয়ে কোনো প্রভাব পড়ছে কি না, এমন প্রশ্নে তিনি কোনো উত্তর দেননি।

এর আগে ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ পণ্ড ও নেতাকর্মীদের গ্রেফতার এবং সরকারের পদত্যাগের দাবিতে ২৯ অক্টোবর সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেয় বিএনপি। হরতালের পর বিএনপি ও সমমনা দলগুলো ৭২ ঘণ্টার অবরোধের ঘোষণা দেয়। এরপর ৩ ও ৪ নভেম্বর বিরতি দিয়ে দ্বিতীয় দফায় ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ দেওয়া হয়। সেই অবরোধ শেষ হলে ৭ নভেম্বর বিরতি দিয়ে ৮ নভেম্বর থেকে আরও ৪৮ ঘণ্টা টানা অবরোধ পালনের ঘোষণা দেয় বিএনপি। এরপর দুদিন শুক্র-শনিবার বিরতি দিয়ে ১২ নভেম্বর থেকে ফের সারাদেশে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ দেওয়া হয়।

সর্বশেষ - দেশজুড়ে